শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫১ অপরাহ্ন

পাকিস্তান থেকে ৫৫,১৪৪ কোটি টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫

বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের কাছে স্বাধীনতা-পূর্ব ৫৫,১৪৪ কোটি টাকার সম্পদ ফেরতের আনুষ্ঠানিক দাবি উত্থাপন করতে যাচ্ছে। এই দাবি জানানো হবে আগামী ১৭ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে।

দীর্ঘ ১৫ বছর পর এ ধরনের বৈঠক হতে যাচ্ছে, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

এ অর্থের মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা-পূর্বকালীন বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) এর বিভিন্ন আর্থিক হিস্যা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সঞ্চয়পত্র, বৈদেশিক সহায়তা এবং অন্যান্য সরকারি তহবিল।

বিশেষ করে ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ভোলা ঘূর্ণিঝড়ের পর পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পাঠানো প্রায় ২০ কোটি ডলারের আন্তর্জাতিক সাহায্যের অর্থ পাকিস্তান সরকার আত্মসাৎ করে বলে বাংলাদেশের অভিযোগ। যুদ্ধ চলাকালে এই অর্থ স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখা থেকে লাহোরে সরিয়ে নেয়া হয়।

এছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত বহু বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তা স্বাধীনতার পর নিজ দেশে ফিরে এলে তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সঞ্চয়পত্রের অর্থ ফেরত দেয়া হয়নি। এসব অর্থ-সহ অন্যান্য দাবি মিলিয়ে ৫৫,১৪৪ কোটি টাকার হিসাব উত্থাপন করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রমাণ-সহ একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে ১৯৭১ সালের পূর্ববর্তী আর্থিক অবস্থা, বকেয়া অর্থের খাতভিত্তিক বিবরণ এবং আইনি ভিত্তি তুলে ধরা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য দাবির মধ্যে রয়েছে-
# স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ব্যাংকিং বিভাগে ৫৯.৬৩ কোটি রুপি পাওনা
# বিভিন্ন তহবিল ও প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ শতকোটি রুপি
# ১৯৭১ সালের আগে করাচি রূপালী ব্যাংকে রক্ষিত ১.৫৭ কোটি টাকা, যা ফেরত দেওয়া হয়নি
# পাকিস্তান সরকারের ইস্যু করা বন্ড ও সঞ্চয়পত্রের দায় বাবদ ২১.৩৮ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশ পরিশোধ করেছে

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, জনসংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশ অবিভক্ত পাকিস্তানের সম্পদের ৫৬ শতাংশ দাবি করতে পারে, আর সমতার ভিত্তিতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ। বিদেশি মুদ্রা অর্জনে বাংলাদেশের অবদান বিবেচনায় এই হার আরও বাড়তে পারে।

এই ইস্যুটি চলতি মাসের শেষ দিকে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও আলোচনায় আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই আর্থিক দাবির পাশাপাশি ২০১০ সালের শেষ বৈঠকের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের দুঃখ প্রকাশ এবং আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন সম্পর্কেও আলোচনা করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102