এসবিডি/ চরফ্যাশনঃভোলা চরফ্যাশনে ঔষধের দোকান মালিকরা এমআরপি (মার্কেট রিটেল প্রাইজ) সিন্ডিকেট করে ক্রেতাদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা৷ কমিশন না দিয়ে নামিদামি কোম্পানী ছাড়াও অখ্যাত, ভেজাল ও নিন্মমানের ঔষধের গায়ে লেখা মূল্যে কিনতে বাধ্য করছে ক্রেতাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরফ্যাশন বাজারে ঔষধের দোকান রয়েছে ১শত ১০ টি৷ সকল দোকান মালিক মিলে গঠন করেছেন কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতি৷ যার সভাপতি বাচ্চু মিয়া ও সাধারন সম্পাদক পিঅাই জালাল৷ সমিতি গত দু’বছর পুর্বে সম্মেলনের মাধ্যেমে এক দরের এমআরপি মূল্যে সকল ফার্মেসীতে ঔষধ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। কোন দোকান মালিক এ আইন ভঙ্গ করলে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন৷ ইতিপূর্বে অসংখ্য দোকান মালিক কে দন্ডিত করেছেন সমিতির নেতৃবৃন্দ৷ সমিতির এমন মনগড়া সিদ্ধান্তে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করে দোকান মালিকরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ৷
অনুসন্ধানে দেখা যায়, নামমাত্র পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে, ড্রাগ লাইসেন্স ব্যতীত অসংখ্য মালিক ঔষধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়৷ অধিকাংশ ফার্মেসিতে হরহামেশাই বিক্রি হচ্ছে আয়ুর্বেদিক, ভেজাল, নিম্নমানের বা নামসর্বস্ব কোম্পানির ঔষধ৷ যা ক্রয় করা হয়েছে শতকরা ৫০ থেকে ৬০ পারসেন্ট কমে৷ কিন্তু ক্রেতাদের কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে এমআরপি অর্থাৎ ঔষধের গায়ে লেখা মূল্যে৷ ভেজাল ঔষধ চেনার জন্য একটি ফার্মেসি দোকান মালিকের শরণাপন্ন হয়েছিলাম৷ স্কয়ার কোম্পানির সেকলো! ঔষধের বক্স, পাতা, ঔষধ, কোম্পানি নাম ও মুল্য হুবহু একই৷ শুধুমাত্র ক্যাপসুলটি ভাঙার পর দেখা যায়, ভেতরের দানা বা পাউডার গুলো দু’টা দুই কালারের৷ যা সাধারণ ক্রেতাদের চেনার প্রশ্নই উঠে না৷
ঔষধ ক্রেতা পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা ও মা কিডনি, ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগী৷ পরিবারে প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকার ঔষধ লাগে। আগে কিছু টাকা ছাড় পেয়ে সাশ্রয় হতো। কিন্তুু এ ভাবে এমআরপিতে ঔষধ বিক্রি করে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। আমরা চরফ্যাশন কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির এমন কালো আইনের প্রতি নিন্দা জানাই৷ সাথে সাথে উক্ত আইন বাতিল এবং ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ বিক্রি বন্ধে চরফ্যাশন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি৷
চরফ্যাশন কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি বাচ্চু মিয়া গতকাল মুঠোফোনে এমআরপি বাণিজ্য সম্পর্কে বলেন, কোম্পানীগুলো আমাদের সীমিত লাভ দিচ্ছে এ থেকে ক্রেতাদের কিছু ছেড়ে দিলে ব্যবসায় বিভিন্ন খরচ করে টিকে থাকা যায়না। তিনি আরো বলেন, দেশেতো কত আইন আছে বাস্তবে কি কার্যকর হয়? কারো সাথে সম্পর্ক থাকলে দোকান মালিকরা একটু ছাড় দিয়েই বিক্রি করে৷ পূর্বে অসংখ্য দোকান মালিক কে এমআরপি থেকে কমিশন বাদ দিয়ে বিক্রি করার অপরাধে অর্থদন্ড দিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আচ্ছা ভাই বিকালে দোকানে চা খেতে আসেন তারপর না হয় কথা বলবো৷
হিসাব-নিকাশ করে দেখা যায়, চরফ্যাশন ফার্মেসিগুলোতে এক রেট এমআরপি বাণিজ্যে যদি দোকান প্রতি দৈনিক মাত্র ২শ টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নেয় তাহলে ২২ হাজার টাকা, মাসে হবে ৬ লাখ ৬০ হাজার, আর বছরে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা৷ শতকরা ১০০% ঔষধ ক্রেতাদের দাবি, চরফ্যাশন উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে এক রেটে এমআরপি বাণিজ্য বন্ধ করে, সাধারণ ক্রেতাদের ঔষধ ক্রয় ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে৷