আবারও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হলেন এক গণমাধ্যমকর্মী। হাসান ইসলাইহ নামের ওই গণমাধ্যমকর্মী খান ইউনিসের আল নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, হাসান ইসলাইহ ছাড়াও নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলায় আরও দুই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার, সামাজিক মাধ্যম এক্সে নাসের হাসপাতাল কমপ্লেক্সে বিমান হামলার কথা জানিয়েছে খোদ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। আইডিএফের দাবি, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, নাসের হাসপাতাল থেকে অভিযান পরিকল্পনা ও পরিচালনা করছিল হামাস। যদিও এই দাবির সপক্ষে যথাযথ প্রমাণ তারা দেখানোর প্রয়োজন মনে করেনি।
আল জাজিরার তথ্যমতে, হাসান ফিলিস্তিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আলাম২৪ নিউজ এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকেও হামাস-ইসরায়েল সংঘাতসংক্রান্ত খবর সরবরাহ করতেন তিনি। এর আগেও একবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন তিনি। গত মাসে নাসের হাসপাতালের বাইরে সাংবাদিকদের তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসা নিতেই নাসের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
গাজায় সাংবাদিকতা: ১০০ বছরে সব যুদ্ধেও এত গণমাধ্যমকর্মীর প্রাণ যায়নিগাজায় সাংবাদিকতা: ১০০ বছরে সব যুদ্ধেও এত গণমাধ্যমকর্মীর প্রাণ যায়নি
এদিকে, হাসানকে একাধিকবার হামাসের সদস্য বলে অভিযুক্ত করেছে ইসরায়েল। এই অভিযোগ অস্বীকার করে হাসান বলেছিলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হামাস বা অন্যান্য দলের সদস্য হিসেবে দেখিয়ে বহির্বিশ্বে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।’ সে সময় তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, হামাস বা অন্য কোনো রাজনৈতিক বা সশস্ত্র দলের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
হাসান ইসলাহের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারের মিডিয়া অফিস। সাংবাদিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানোর তীব্র নিন্দা করে এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গাজার সাংবাদিকদের পরিকল্পিতভাবে লক্ষ করে হত্যা ও গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী একা নয়, এই জঘন্য অপরাধের দায় মার্কিন প্রশাসনসহ গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী অন্য দেশগুলো—যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন ২৩২ সাংবাদিক। এর আগে, গত মাসে সাংবাদিক ও লেখক অ্যান্টনি লোয়েনস্টাইন আল–জাজিরাকে বলেন, গাজায় যত সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, তা গত ১০০ বছরে বিশ্বের সব যুদ্ধ মিলিয়ে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তিনি এই তথ্যের উৎস হিসেবে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ‘কস্ট অব ওয়ার’ প্রকল্পের একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করেন।