স্মরণকালের শক্তিশালী ভূমিকম্পে নরসিংদীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজনে। তাছাড়া অন্তত শতাধিক মানুষ আহতের খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে চারজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সর্বিক) আবুল তাহের মোহাম্মদ শামসুজাম্মান।নিহতরা হলেন- কাজম আলী ভূঁইয়া (৭০), নাসির উদ্দিন (৫০), দেলোয়ার হোসেন (৩৭) এবং দোলোয়ারের ছেলে ওমর ফারুক (৮)।
এদের মধ্যে বৃদ্ধ কাজম আলী ভূঁইয়া মাটির ঘর চাপায়, দেলোয়ার এবং ওমর ফারুক ঘরের দেয়াল চাপায় নিহত হয়েছেন। তাছাড়া ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাসির উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। হাসপাতাল, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভূমিকম্পের সময় উপজেলার মালিতা গ্রামের বৃদ্ধ কাজম আলী ভূঁইয়া মাটির ঘর চাপা পড়েন। একইভাবে দেয়াল চাপা পড়েন সদর উপজেলার দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে ওমর ফারুক (৮)। অন্যদিকে ভূমিকম্প চলাকালে আতঙ্কিত হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হন পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দিন। তাদের মধ্যে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে নাসির উদ্দিনের মৃত্যু হয়।
দোলোয়ার হোসেন ও ওমর ফারুকের বাড়ি নেত্রকোনায়। তবে তারা নরসিংদীর গাবতলী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভূমিকম্পের সময় ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে আহত হন তারা। এর মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দেলোয়ার। পরে সেখানে তারও মৃত্যু হয়।দোলোয়ার হোসেন ও ওমর ফারুকের বাড়ি নেত্রকোনায়। তবে তারা নরসিংদীর গাবতলী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভূমিকম্পের সময় ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে আহত হন তারা। এর মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দেলোয়ার। পরে সেখানে তারও মৃত্যু হয়।
এর আগে ঢাকায় নেওয়া পথে কাজম আলী ভূঁইয়া ও দেলোয়ের ছেলে ওমর ফারুকের মৃত্যু হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সর্বিক) আবুল তাহের মোহাম্মদ শামসুজাম্মান জানান, ভূমিকম্পে নতুন করে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে। এদের মধ্যে বাবা-ছেলেও রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে।তাছাড়া ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ওই এলাকায় অন্তত শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ভূমিকম্পে নরসিংদী সদর ও পলাশ উপজেলায় আহতের সংখ্যা বেশি। আহতদের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ৫৭ জন এবং নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি আছেন। ভূমিকম্পে আহতদের মধ্যে এই ৭০ জন দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাছাড়া আহত অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে ১৭ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন— তাসপিয়া (১৮), শামীম (২০), রাকিব (২৪), আতিকুর (৭), ওমর (১০), সাইফুল (৩৬), মেহেরউন (২০), আবির (৬), নাসরিন (৩৭), ইয়ামিন (২২), মিথিলা (২০), তামিম (৬), হনুফা (৪০), বিল্লাল (৫০), জাকির (৩৫), মান্নান (১৬), ইমানুল (১৯)।ভূমিকম্পে নরসিংদীর পলাশ, শিবপুর, রায়পুরা, মনোহরদী, বেলাব ও মাধবদীতেও বহু ভবনে হয় ফাটল দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার নতুন বাজার গ্রামের ইসহাক মিয়ার বাড়ি ভেঙে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন ফসলি জমিতেও ফাটল দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও। পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।পলাশ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুল শহিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পলাশ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের চেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনে