চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে আবারও পুকুর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলতি নভেম্বরে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এক ইউনিয়ন থেকে মোট ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল গুলি-কার্তুজ এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, ইতোপূর্বে গ্রেপ্তার এক আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের অভিযান পরিচালনা করে হাজী মকবুল আহাম্মদ সওদাগর বাড়ির পুকুরপাড়ে পুঁতে রাখা অবস্থায় সিলিংসহ একটি একনলা বন্দুক ও তিনটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও একইদিন একই এলাকায় পৃথক অভিযানে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকেও আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।গ্রেপ্তাররা হলেন- নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত অলি আহমেদের ছেলে জহির আহমেদ (৫২), ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হাবিব ওরফে হাব্বে ডাকাতের ছেলে মো. সাকিবুল ইসলাম (২২) ও মো. রানা (৪৫)।স্থানীয়ভাবে ধারাবাহিকভাবে পুকুর থেকে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও হাটবাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। রাউজানজুড়ে স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।
জেলা পুলিশ জানায়, রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নে চলতি নভেম্বরের ৪, ৬, ১০, ১৭ এবং ১৮ তারিখে পৃথক অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে বিদেশি ও দেশি ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮টি দেশীয় অস্ত্র, ৭৫ রাউন্ড গুলি, ২৪ টি কার্তুজ। এসব ঘটনার পর মোট পাঁচটি অস্ত্র মামলা করা হয়েছে এবং ৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।সর্বশেষ অভিযানের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. রাসেল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৮ নভেম্বর রাতভর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও রাউজান থানা পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত অভিযানে ১৩ নম্বর নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট মুসলিম হাই স্কুলের পাশে মুদির দোকানদার জহির আহমেদকে আটক করা হয়। এইসময় তিনি নিজ হাতে দোকানে থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি এবং দুটি ম্যাগাজিন বের করে দেন। পরবর্তীতে জহিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি, রাউজান ও পটিয়া থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে অস্ত্র মজুদের সঙ্গে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে পটিয়ার হাইদগাঁও মাইজপাড়া এলাকা থেকে সাকিবুল ইসলাম ও রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।প্রসঙ্গত, গত ১০ নভেম্বর চৌধুরীহাট এলাকার ইসহাকের পুকুর সেচে উদ্ধার করা হয় থানা থেকে লুণ্ঠিত একটি চাইনিজ রাইফেল, একটি শটগান এবং বিপুল পরিমাণ গুলি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ নভেম্বর নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পালোয়ানপাড়ার আলী কন্ট্রাক্টরের পুকুরের পানি সেচে চুম্বক ফেলে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং পাঁচ রাউন্ড গুলি।