কাঠ-চাটাইয়ের বাজার মন্দা/খাটিয়ার বাজার ভাল না/কুন্দার হাটে ক্রেতা নেই/ ক্রেতার আশায় কুন্দা চাটাই বিক্রেতা/কুন্দার বাজার মন্দা।
নারায়ণ সরকার, রূপগঞ্জঃ
আজ বাদে কোরবানীর আর বাকী তিন দিন। চলছে পশু কেনা ও জবাইয়ের-প্রস্তুতি। তারপরও জমছে না মাংস কাটার কাঠ, চাটাইসহ কোরবানির আনুষঙ্গিক উপকরণের বাজার। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম বেশি সব উপকরণের।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টা। নগর পাড়া বাজারে মাংস কাটার কাঠের গুড়ি নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা আলা উদ্দিন। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, “না ভাই, বেচা কিনি তেমন একটা নাই। অন্যান্ন ঈদে এ সময় গরু ছাগলের পাশাপাশি কুন্দা কেনার ধুম পড়ে যেত। করোনা আর লকডাউনে সব শেষ কইরা দিছে ভাই। আমাগো গরীবের কপাল পুড়ছে এ করোনায়। রিজিক কাইরা নিছে লকডাউনে।”
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানুষের ভিড় নেই কুন্দা, চাটাই বিক্রির হাটে। মুড়াপাড়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, বড় আকারের এক-একটি চাটাই বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। আর মাঝারি আকারের চাটাই বিক্রি হচেছ ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়।
এখানে আব্দুস ছালাম নামে এক বিক্রেতা জানালেন, ব্যবসা বেশ ভালা না। বেচাবিক্রি নাই। সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ২০/৩০টির মতো চাটাই বিক্রি করেছেন তিনি।
এদিকে শাহ আলম নামে এক ক্রেতা ১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছেন একটি চাটাই। তার প্রশ্ন- চাটাইয়ের দাম এতো হয় কিভাবে? পাশের থেকে ফোড়ন কাটেন একজন, ‘লিখে লাভ নেই। দেখা যাবে দাম আরও বেড়ে গেছে। ’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কোরবানির ঈদে এই একই সাইজের চাটাই বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এবার দাম এতো বেশি কেন জিজ্ঞাসা করলে বিক্রেতা আব্দুস ছালাম বলেন, আমরা বেশি দামে কিনে এনেছি তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদে কিছু করার নেই।
এরপরই যে জায়গায় ভিড় সবচে’ বেশি হত তা হলো মাংস কাটার কাঠের টুকরা, কুন্দা, খাইট্টা, খাটিয়ার ভ্রাম্যমান দোকানে। কিন্তু এবার এসময় সেখানেই নীরবতা দেখা যাচ্ছে। তেতুল কাঠের এক একটি খাটিয়া আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০/৫০০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রি কেমন জিজ্ঞাসা করলে বিক্রেতা আলা উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১০ পিচও বেচতে পারিনি। দাম শুনে সেখানেই ক্ষেপে যান আগারপাড়া থেকে আগত আউয়াল মিয়া নামের এ ক্রেতা।
কথা হয় জালাল উদ্দিন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদে জবাই দেওয়ার জন্য এসব জিনিস কিনতে হচ্ছে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি বিক্রেতারা কসাইয়ের মতো দাম রাখছে। এব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুশরাত জাহান বলেন, সারা বছর এসব দোকান একটা তেমন দেখা যায় না। এরা মৌসুমী ব্যবসায়ী। তাছাড়া ভ্রাম্যমান। করোনা আর লকডাউনে গোটা দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা একটু দাম বেশি নেনই। আমাদের বাজার তদারক টিম ও ভ্রাম্যমান আদালত সক্রিয় রয়েছে। অতিরিক্ত দাম নিলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।