বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাসশ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ৪০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে নথুল্লাবাদ টার্মিনালের বাসমালিক গ্রুপের কার্যালয়ে বাসমালিক, প্রশাসন এবং ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ অধ্যক্ষের মধ্যে ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকে সমঝোতা হলে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। এরপরই ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল শুরু করে।তবে কিছু বাস এখনও মেরামত না হওয়ায় অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।এর আগে শনিবার রাতে হাফভাড়া না নেওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত অর্ধশত বাস ভাঙচুরের অভিযোগ তোলেন মালিক ও শ্রমিকরা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, হাফভাড়া নিয়ে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে একজন শ্রমিক। বিষয়টি জানতে টার্মিনালে গেলে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে বিএম কলেজের শত শত শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনার জেরে বরিশাল থেকে দূরপাল্লাসহ সবধরণের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।সর্বশেষ প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর সোমবার দুপুরে তিনপক্ষের বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়— শিক্ষার্থীরা সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা হাফভাড়া পাবেন, বাস চালক–শ্রমিকদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে, যাত্রী ও শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মানজনক আচরণ নিশ্চিত করবে শ্রমিকরা, ভাড়া ও হাফভাড়ার চার্ট টাঙানো বাধ্যতামূলক হবে। ক্ষতিগ্রস্ত বাস মেরামতের দায়িত্ব মালিকপক্ষ নেবে, আর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতারা জানান, আর্থিক সংকটের কারণে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বেশিরভাগ বাস মেরামত করা সম্ভব হয়নি। তবে কাউন্টারগুলো আংশিক মেরামত করে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু করা গেছে। ভাঙচুর হওয়া বাসগুলো টার্মিনালে রেখে মেরামতের কাজ চলছে।এদিকে সোমবার দুপুরে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ শেখ মো. তাজুল ইসলাম, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারেফ হোসেন, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার ও পুলিশ কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত বাস ও কাউন্টার পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে বৈঠকে সমঝোতার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চালুর সিদ্ধান্ত হয়।
জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘যে গাড়িগুলো চলাচলের উপযোগী আছে সেগুলো আজই রাস্তায় নামানো হবে। বাকিগুলো মেরামতের পর চলবে।’বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি আল মামুন উল ইসলাম জানান, ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকে সব পক্ষই সমঝোতায় পৌঁছেছে। কেউ আইনি ব্যবস্থা নেবে না বলে জানিয়েছে। ক্ষতিপূরণের দাবি উঠলেও পরে তা আলোচনার বাইরে থাকে। এখন টার্মিনালের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।