যশোর-৬ নির্বাচনী আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মাঠে নেমেছে তৃণমূলের নেতারা। ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে দলের উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন পদ পদবীধারী প্রায় শতাধিক নেতা স্বাক্ষরিত একটি গণপিটিশন দায়ের করেছে। ওই গণপিটিশনে দাবি করা হয়েছে, এ আসনে প্রাথমিকভাবে যাকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তিনি একজন জনবিচ্ছিন্ন তরুণ রাজনীতিক। এলাকার দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি একটি পতিত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তার সাথে স্থানীয় বিএনপি ও এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক নেই। তিনি বর্তমানে এলাকায় পতিত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে চলাফেরা করছেন।উল্লেখ করা হয়, আসনটিতে বিএনপির শক্ত সাংগঠনিক অবস্থান। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে থাকায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা নানাভাবে হামলা, মামলা, হত্যা, গুম, খুনের শিকার হন। এসময় দলের কান্ডারী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন আজাদ ঢাল হয়ে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ান। নিজের সর্বস্ব দিয়ে নেতাকর্মীদের কারামুক্ত, চিকিৎসার খরচ, মামলা থেকে মুক্ত করতে আইন আদালতে লড়াই করা থেকে শুরু করে সার্বক্ষণিক অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।জানা গেছে, ধানের শীষের প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের জন্ম একটি আওয়ামী পরিবারে। তার বড় ভাই কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, আরেক ভাই কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিক উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক, মেঝ ভাই কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও গত উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে চার নম্বর স্থানে ছিলেন। অপর ভাই কাজী মাজহারুল ইসলামসোনা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের যশোর জেলা শাখার সহ-সভাপতি এবং বাবা কাজী রফিকুল ইসলাম কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এবং কেশবপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান। আরও উল্লেখ করা হয়, তাদের অত্যাচারে স্বয়ং কেশবপুরে আওয়ামী লীগের একটি অংশ ও বিএনপি চরমভাবে অত্যাচারিত ছিল। গত ১৫ বছর ধরে এই পরিবারের হাতে প্রতি পদে পদে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নানাভাবে হামলা মামলার শিকার হয়েছে। তারা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ কেশবপুর আসনের এমপি শাহিন চাকলাদারের বিশ্বস্ত সেনাপতি ছিলেন। এই পরিবারের সন্তানের মনোনয়ন পাওয়াতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বৃহৎ অংশের নেতাকর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।গত শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর কেশবপুর বিএনপির প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীর স্বাক্ষরিত এই আবেদনটি গ্রহণ করেন মো. সেলিম হোসেন নামের একজন স্টাফ। আবেদনপত্রে কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সিনিয়র সহ-সভাপতি রেহেনা আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর কবির বিশ্বাস, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান চৌধুরীসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ সুপার ফাইভ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষর করেছেন।
সূত্র : মানবজমিন