ভোক্তা অধিকার পেতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন নুর হোসেন।
এইচ.এম.আল-আমিন,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
সাধারণত যিনি উৎপাদিত পণ্য ও সেবা চূড়ান্ত ভোগের জন্য ক্রয় করেন, অর্থনীতির ভাষায় তাকে ভোক্তা বলে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, যিনি কোনো পণ্য ক্রয় করেন কেবল নিজে ভোগ করার জন্য তিনিই ভোক্তা।
কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে একজন বিক্রেতা বাধ্য। যদি কোনো বিক্রেতা এসব প্রশ্নের উত্তর না দেন বা দিতে অপারক প্রকাশ করেন, তখন আইন অনুযায়ী তাতে ভোক্তা অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়। জাতিসংঘ স্বীকৃত ভোক্তা অধিকার ৮টি,মৌলিক চাহিদা পূরণের অধিকার, তথ্য পাওয়ার অধিকার, নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার অধিকার, পছন্দের অধিকার, জানার অধিকার, অভিযোগ করা ও প্রতিকার পাওয়ার অধিকার, ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে শিক্ষা লাভের অধিকার, সুস্থ পরিবেশের অধিকার।
পণ্য ক্রয়ে প্রতারণার হাত থেকে ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে বহুল প্রতীক্ষিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করেছে। এ আইনের ফলে কোনো ভোক্তা পণ্য ক্রয়ে পণ্যের ওজন, পরিমাণ, উপাদান, মূল্যসহ কোনো বিষয়ে প্রতারিত হলে নির্ধারিত পন্থায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে। তাহলেই অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং ভোক্তাদের প্রতারিত হওয়া থেকে বিরত থাকবে।
লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর জেলা বিভিন্ন বাজারে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অভিযান পরিচালিত হয় এতে মুদি দোকান, ফার্মেসী, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শপিং মল, খাদ্য দোকানে খাবারে ভেজাল মিক্স অনিয়মে ব্যবসায়ীদের কঠিন আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
উক্ত অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে সহকারি পরিচালক চাঁদপুর/লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত সহকারি পরিচালক নুর হোসেন। তিনি জানান পন্য উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, দ্রব্য মূ্ল্য তালিকা , পন্যের মান নির্নয় নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ আসে, আমরা সাথে সাথে সত্য তথ্য ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা সহ অভিযোগকারীকে মোট জরিমানার ২৫ শতাংশ প্রদান করার বিধি থাকায় তা প্রদান করি।এই অভিযান অব্যহত থাকবে
তিনি আরো জানান পণ্য কিনে প্রতারিত হলে অভিযোগ দায়ের করার পদ্ধতি খুবই সহজ। বর্তমানে প্রত্যেকের হাতে হাতে স্মার্টফোন। গুগোল প্লে-স্টোরে সংরক্ষিত ‘ভোক্তা অধিকার ও অভিযোগ’ অ্যাপসের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা যায়।এছাড়াও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে সরাসরি ইমেইলের (nccc@dncrp.gov.bd) মাধ্যমেও অভিযোগ করা যায়। ই-মেইলে অভিযোগকারীর নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ঘটনার বিবরণ এবং প্রমাণস্বরূপ পণ্য ক্রয়ের রসিদের ছবি সংযুক্ত করতে হবে।
এছাড়া ০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮ ও ০৩১-৭৪১২১২ নম্বরে কল দিয়েও অভিযোগ জানানো যাবে। এরপর তদন্ত শেষে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে যে আর্থিক জরিমানা করা হবে, তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয়া হবে। তবে অভিযোগটি পণ্য কেনার ৩০ দিনের মধ্যে দায়ের করতে হবে।
ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে। সবাই সচেতন হলেই আইনটির সঠিক বাস্তবায়ন হবে। আমাদের একটুখানি সচেতনতাই পারে নিরাপদ খাদ্য ও ভেজালমুক্ত পণ্যের বাংলাদেশ গড়তে।