মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন

পদোন্নতির ডাক পেলেন হাসিনার সাজা প্রত্যাখ্যানে স্বাক্ষর দেওয়া শিক্ষক মাসুদ

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

পদোন্নতির ডাক পেয়েছেন হাসিনার সাজা প্রত্যাখ্যান করে স্বাক্ষর দেওয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা।

গত ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

আগামীকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে হইচই পড়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ড. মাসুদ রানা বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীপন্থি শিক্ষক সমিতি নীল দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের সঙ্গেও তার নাম জড়িত রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের বাংলো থেকে বিভিন্ন পরীক্ষার ওএমআর শিট ও এমপির ডিও লেটার উদ্ধার করা হয়। তখন ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন ড. মাসুদ রানা।

এই ঘটনায় মাসুদ রানাসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে শোকজের পর কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিষয়টির বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পর্যায়োন্নয়ন সভায় অংশগ্রহণে মাসুদ রানার নাম থাকায় সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, সহযোগী অধ্যাপক মাসুদ রানা বিগত আওয়ামী সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে ভিসি সৌমিত্র শেখরকে ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন। তা বিভিন্ন বিষয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে অধ্যাপক পদে তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে পদোন্নতি দেওয়া হলে জুলাই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা বলেন, ‘সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক হতে বিগত নয় মাস আগে আবেদন করেছি। পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভায় অংশগ্রহণের জন্য এখনো কোনো চিঠি পাইনি। পদোন্নতি হয় কি না তাও জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওএমআর কেলেঙ্কারিতে আমার নাম অযথা জড়ানো হয়েছে। শেখ হাসিনার রায় প্রত্যাখ্যান করে যেখানে আমার নাম ব্যবহার করে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত নই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকায় প্রতিবাদও করতে পারিনি।’

মাসুদ রানাকে পদোন্নতি বিষয়ে জানতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

তবে পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এগুলো নিয়ে কথা বলা যায় না। আপনি অফিসে সামনাসামনি আসুন, তারপর কথা বলব।’

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনাকে সাজা দেওয়ার পর গত ১৭ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম প্রদীপের পাঠানো ১০০১ শিক্ষকের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতিত্বকারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও প্রহসনমূলক মামলার সাজানো রায় প্রত্যাখ্যান করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর ক্ষোভ ও দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে যে রায় ঘোষণা করেছে তা প্রহসনমূলক ও অগ্রহণযোগ্য। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বর্তমানে ক্যাংগারু কোর্টের রূপ গ্রহণ করেছে এর স্বৈরাচারী, পক্ষপাতদুষ্ট এবং ন্যায়বিচার পরিপন্থি কার্যকলাপ তথা মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত এ দেশের কোটি মানুষ আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ ধরনের বিদ্বেষ ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং পূর্বনির্ধারিত রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি এবং ক্যাংগারু কোর্টের প্রহসনমূলক রায়কে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102