সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০২ অপরাহ্ন

বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, বিশ্বরেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসকে স্মরণীয় করে তুলতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তবর্তী সরকার। এ দিন সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের মাধ্যমে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে তিন বাহিনীর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার একসঙ্গে আকাশ থেকে পতাকা হাতে স্কাইডাইভিং করবেন, যা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে নতুন উচ্চতায়।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হবে এই মহাযজ্ঞ। সকাল থেকেই সেখানে শুরু হবে সশস্ত্র বাহিনীর ফ্লাই-পাস্ট মহড়া এবং বিজয় দিবসের ব্যান্ড-শো। এরপর সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে আকাশে উঠে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন সদস্য পতাকা হাতে একসঙ্গে প্যারাস্যুটিং করবেন। এই আয়োজন সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যাতে দেশের মানুষ নিজের চোখে দেখতে পারে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিমূলক সভায় এই বছরের আয়োজনে কী কী যুক্ত হচ্ছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি তুলে ধরেন এবং এ বছরের বিজয় উদযাপন যেন অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় আরও মহিমান্বিত হয় সে বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

সভায় জানানো হয়, শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই বিজয় দিবসের আয়োজনে যুক্ত হবে বিভিন্ন শহরের বিমান ও নৌঘাঁটি। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় ফ্লাই-পাস্ট ও ব্যান্ড-শো করবে। সারা দেশেই পুলিশ, বিজিবি, আনসার বাহিনীও আয়োজন করবে বিশেষ প্রদর্শনী। দেশের প্রতিটি কোণ বিজয়ের রঙে রঙিন হয়ে উঠবে।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ও আয়োজন করছে দেশের সর্ববৃহৎ বিজয়মেলা, যা চলবে তিন দিনব্যাপী সব জেলা ও উপজেলায়। শিশুদের জন্য থাকবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫ ডিসেম্বর হবে অ্যাক্রোবেটিক শো ও যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’। পরদিন ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা। একই সময়ে দেশের ৬৪ জেলাতেও একযোগে পরিবেশন হবে মুক্তিযুদ্ধের গান, যাতে দেশের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ে বিজয়ের সুর।

সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, ‘বিজয় দিবস বাংলাদেশের গৌরবময়তম দিন। এই দিনে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যেই আমরা বৃহৎ পরিসরে আয়োজন করছি।’ সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এবারের বিজয় উদযাপন তরুণ প্রজন্মের জন্যও বিশেষ। স্বাধীনতার গান, কনসার্ট, যাত্রাপালা, এয়ার শো—সব মিলিয়ে এবারের আয়োজন হবে ইতিহাসে স্মরণীয়।

প্রতি বছরের মতো এবারও সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ভবনে থাকবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোকসজ্জা। হবে ৩১ বার তোপধ্বনি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে দেশজুড়ে। মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডা-সহ সব উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় থাকবে বিশেষ প্রার্থনা। সরকারি-বেসরকারি জাদুঘর ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো শিশুদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, সিনেমা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টিকিটে দেখানো হবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র।এ ছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, পায়রা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন নৌবন্দরে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, পথশিশু কেন্দ্রেও হবে প্রীতিভোজের আয়োজন।

সব মিলিয়ে এবারের বিজয় দিবস উদযাপন শুধু স্মৃতি নয়, এ যেন জাতির নতুন করে একাত্ম হওয়ার আহ্বান। আর আকাশে লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের জাঁকজমকপূর্ণ জাম্প নিঃসন্দেহে এই উদযাপনকে বিশ্বমানের এক ইতিহাসে পরিণত করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102