সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রণীত ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ অধ্যাদেশ কার্যকর হলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন, শৃঙ্খলাবিষয়ক সিদ্ধান্তসহ সব প্রশাসনিক ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের আওতায় আসবে। তবে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা বিচারকদের বিষয়গুলো আগের মতোই আইন মন্ত্রণালয় পরিচালনা করবে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ প্রস্তাব পাস হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আইন উপদেষ্টা জানান, একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠনের দাবিটি গত ২০–৩০ বছর ধরে নাগরিক সমাজে আলোচিত। নানা রাজনৈতিক আশ্বাসের পর এবার তা বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশেও পৃথক সচিবালয়ের কথা উল্লেখ ছিল।
নতুন অধ্যাদেশ কার্যকর হলে যা পরিবর্তন হবে
নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা ও ছুটিসংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়
বিচারকদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলিও নির্ধারণ করবে সচিবালয়
আইন মন্ত্রণালয়ের নিম্ন আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ শেষ হবে
আর্থিক ব্যবস্থাপনাতেও থাকবে উচ্চ আদালতের স্বাধীন কর্তৃত্ব
৫০ কোটি টাকার মধ্যে প্রকল্প অনুমোদন দেবেন প্রধান বিচারপতি
এর বেশি ব্যয়ের প্রকল্প যাবে প্রধানমন্ত্রীর একনেক সভায় প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা বিচারকদের তত্ত্বাবধান অপরিবর্তিত নির্বাচন কমিশন, দুদক, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বা আইন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা বিচারকদের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকবে, জানিয়েছে আইন উপদেষ্টা।এ অধ্যাদেশ এখনই কার্যকর হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠন সম্পন্ন হওয়ার পর সরকারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে দ্রুতই এটি সম্পূর্ণ কার্যকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর মতে, কয়েক মাসের মধ্যেই সচিবালয় গঠন শেষ হতে পারে।প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে এ বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদের ৫১টি বৈঠকে নেওয়া ৩৯৪টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩২২টি, যা ৮২ শতাংশ। এ ছাড়া বৈঠকে ‘ভূমির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে।