যশোরের চারটি উপজেলার ৪০ ইউনিয়ন ও ৬টি পৌরসভার ৩৩টি ওয়ার্ডের কমিটি একযোগে বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে জেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল। সোমবার সংগঠনের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম আকতারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় তৃণমূলের নেতাকর্মীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বাতিল হওয়া কমিটির নেতারা এতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ভবিষ্যতে পদবঞ্চিত হতে পারেন– এমন ভাবনা থেকে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাননি।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের ভাষ্য, নিষ্ক্রিয় তৃণমূলকে ঢেলে সাজিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে নিষ্ক্রিয় কিছু নেতাকে কারণ দর্শাতেও (শোকজ) বলা হয়েছে।
সাংগঠনিক সূত্র জানায়, শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান। সেখানে অনেক ইউনিটের নেতাকর্মীর অনুপস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর উপস্থিতিতেই নিষ্ক্রিয় ইউনিটগুলোর কমিটি বিলুপ্তি ও দায়িত্বশীল নেতাদের শোকজ করা হয়। সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একযোগে ৭৩ ইউনিটের কমিটি বিলুপ্তির কথা জানানো হয়েছে।
বিলুপ্ত কমিটিগুলো হলো– চৌগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, বাঘারপাড়ার জহুরপর, বন্দবিলা ও নারিকেলবাড়ীয়া ইউনিয়ন, অভয়নগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও মণিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন; বাঘারপাড়া ও নওয়াপাড়া পৌরসভার সব ওয়ার্ড, মণিরামপুর পৌর শাখার ১, ৫, ৬, ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড; কেশবপুর পৌর শাখার ১, ৩, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড; বেনাপোল পৌর শাখার ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং যশোর নগর শাখার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড। এ ছাড়া শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৭ দিনের মধ্যে কর্মিসভা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিলুপ্ত ইউনিটগুলোর কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয় গণমাধ্যমের। তারা ভবিষ্যতে পদবঞ্চিত হতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকে নাম প্রকাশে রাজি হননি। তাদের ভাষ্য, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের মতবিনিময় সভায় যেসব নেতা উপস্থিত ছিলেন না, তাদের কমিটিগুলোই মূলত বিলুপ্ত করা হয়েছে। এতে হতাশ হয়েছেন তারা। এমন সিদ্ধান্তের আগে তাদের সঙ্গে কথা বলে নিলে ভালো হতো।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব রাজিদুর রহমান সাগরের ভাষ্য, বিভিন্ন ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিএনপিতে সক্রিয়, অনেকেই বিদেশে। কার্যক্রম গতিশীল ও শক্তিশালী করতে কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে। অবশ্যই পুনর্গঠনের দরকার আছে। এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।