যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনে বছরের বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো রাশিয়া। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮৪ জন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে আঘাত হানে বলে জানিয়েছে দেশটর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
রুশ বাহিনী সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক পোস্টে তিনি বলেন, জেরুজালেমে প্রভুর প্রবেশের উৎসব পাম সানডে উপলক্ষে যখন মানুষ গির্জায় যাচ্ছিল, ঠিক সে সময় রাশিয়া সুমির কেন্দ্রস্থলে আঘাত করেছে।
তিনি আরও বলেন. ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ- বিশ্বের সকলেই এই যুদ্ধ ও হত্যার অবসান চায়। কিন্তু রাশিয়া ঠিক এই ধরণের সন্ত্রাস চায় এবং এই যুদ্ধকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আক্রমণকারীর ওপর চাপ না দিলে শান্তি অসম্ভব। আলোচনা কখনও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান বোমা থামাতে পারেনি।’
সুমি অঞ্চল দিয়ে এগিয়ে আসতে পারে রুশ বাহিনী, গত কয়েকদিন ধরে এমন সতর্কতা দিয়ে আসছে ইউক্রেন। এই সতর্কতার মধ্যেই সুমিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটল।
এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় একটি ওষুধের গুদামে রুশ বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। গতকাল শনিবার ওষুধের গুদামে ওই হামলা হয়। ভারতে ইউক্রেনের দূতাবাস জানিয়েছে, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। হামলায় বিপুল পরিমাণ ওষুধ ধ্বংস হয়ে গেছে।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। শুক্রবার ( ১১ এপ্রিল) সেন্ট পিটার্সবার্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
চলতি বছর পুতিনের সাথে উইটকফের এটি তৃতীয় আলোচনা। বৈঠক শেষ হওয়ার পর ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের মীমাংসা করা।’
এর আগে, আলোচনা নিয়ে রাশিয়ার প্রতি হাতাশা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘রাশিয়াকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ভয়াবহ এবং অর্থহীন যুদ্ধে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।’
এছাড়া ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনীয় চুক্তি থেকে সরে যায় তাহলে রাশিয়ার তেল কিনবে এমন দেশগুলোর উপর দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।