সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিশু-কিশোরদের ভোটের সুযোগ দিয়ে দায় শোধ করতে পারি। ঢাবির জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি-দেয়াল লিখন নষ্ট করলেই ব্যবস্থা। ৩১ ডিসেম্বর সংবিধান বাতিলের ঘোষণা আসতে পারেঃ ফরহাদ মজহার। আনিসুল হক ও সালমানকে রক্ষার চেষ্টা, সেই সানজিদাকে সাময়িক বরখাস্ত। হাসিনাকে দেশে আনার মানে হলো আরেকটি তামাশাঃ শফিক রেহমান। হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভে’র গ্রাফিতি মুছে দেওয়ার চেষ্টা অনিচ্ছাকৃত ভুলঃ ঢাবি প্রশাসন। ১ জানুয়ারি পর্দা উঠছে বাণিজ্য মেলার, উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ ‘চিংড়ি পলাশ’ গ্রেপ্তার। ৩ হাজারের বেশি অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডের অধিকাংশই ভুয়া,সোমবার থেকে অস্থায়ী পাস। বিপিএলের টিকেট না পেয়ে মিরপুরে দর্শকদের বিক্ষোভ।

সখিপুরে ২১ দিন পর শিশু সামিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারী গ্রেফতার।

নাজমুস সালেহীন সজীব,টাংগাইল বিশেষ প্রতিনিধি।
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
সখিপুরে ২১ দিন পর শিশু সামিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারী গ্রেফতার।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া (৯)। এ সময় প্রতিবেশী সাব্বির আহমেদ (২১) মুক্তিপণের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করতে পিছু নেন। বনের পাশে গেলে পেছন থেকে শিশুর মুখ চেপে ধরে পাশের একটি বাঁশবনে নিয়ে যান তিনি।
সামিয়া বাঁচার জন্য কাকুতি–মিনতি করে। মেয়েটি তাঁকে চিনে ফেলায় হত্যার পরিকল্পনা করেন। একপর্যায়ে এলাস্টিকের রশি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মেয়েটিকে হত্যা করেন তিনি। সকাল নয়টার দিকে ওই শিশুর লাশ বাঁশবাগানের ভিতরে পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে তিনি বাড়ি চলে আসেন। বাড়িতে গোসল সেরে সকালের নাশতা খেয়ে বেলা ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে সাব্বির সামিয়ার বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমুতে অডিও বার্তা পাঠায়। ওই দিন শেষ রাতের দিকে তিনি ওই বাঁশবাগানের ভেতর থেকে লাশ  নিয়ে ২০০ গজ দূরে আরেকটি বনের পাশে নালার মধ্যে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখেন। এর এক দিন পর পুলিশ ওই নালা থেকে লাশ উদ্ধার করে।
এ হত্যাকাণ্ডের ২২ দিন পর রহস্য উদ্ঘাটন করেছে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও সখীপুর থানা-পুলিশের যৌথ একটি দল। সাব্বিরকে গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। রাতেই তিনি পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সখীপুর থানা চত্বরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তার সাব্বির উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সাব্বির নিহত সামিয়ার স্কুলের পাশে মুদিদোকান করতেন।
পুলিশ সুপার বলেন, সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া দুই বছর আগে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। তিনি উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিহত সামিয়া দাড়িয়াপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সামিয়া অপহৃত হওয়ার পরদিন তার বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সখীপুর থানায় অপহরণের মামলা করেন।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, সাব্বির ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়লে তিনি কয়েক মাস আগে থেকেই মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশু অপহরণের পরিকল্পনা করেন। সামিয়ার বাবা কুয়েতপ্রবাসী হওয়ায় তাঁর মেয়েকেই অপহরণ করার সিদ্ধান্ত নেন সাব্বির।
পুলিশ ও সামিয়ার পরিবার সূত্র জানায়, ৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সামিয়া বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়া শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে সে বাড়ি ফিরছিল। পথে একটি দোকানে সহপাঠীরা কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সামিয়া একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। এদিকে বাড়ি ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় মা রুপা আক্তার শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে অনেক আগেই বাড়ি চলে গেছে। পরে মেয়েকে খুঁজতে বের হলে বাড়ির কাছাকাছি একটি স্থানে মেয়ের ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন রুপা। এর কিছুক্ষণ পর ১০টা ৪০ মিনিটে রঞ্জু মিয়ার মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমোতে একটি অডিও বার্তা দেয় সাব্বির। ওই অডিও বার্তা পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর পুলিশ বাড়ির ৪০০ গজ দূর থেকে একটি গহিন বনের পাশে মাটি খুঁড়ে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সখীপুর থানার উপপরিদর্শক মাসুদ রানা আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, সাব্বির বলেছেন অপহরণের পর খুনের পরিকল্পনাকারী তিনি নিজেই। তারপরও পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল শুক্রবার সাব্বিরকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102