৩১ ডিসেম্বর সংবিধান বাতিলের ঘোষণা আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রচিন্তক ও গবেষক ফরহাদ মজহার। একইসঙ্গে তিনি দেশের তরুণদের রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করারও দাবি তুলতে পরামর্শ দিয়েছেন।
রবিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত সহযোদ্ধাদের সম্মাননা ও পুনর্বাসনের এ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সচেতন নাগরিক সমাজ এ অনুষ্ঠানে আয়োজন করেন।
সেখানে ফরহাদ মজহার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান যে ঘটল, এটি একটি অভূতপূর্ব ঘটনা সন্দেহ নাই। এ যে একটা ঘটনা আসছে, ঘটতে যাচ্ছে এ সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে আমার লেখালেখিতে বলছিলাম। অনেকে হাসাহাসিও করেছেন, বিশ্বাসও করেন নাই। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আমার যে বইটি বের হয়েছে ‘ গণঅভ্যুত্থান ও গঠন’, সেটি কাকতালীয় হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ঘটে গিয়েছে। এর কারণগুলো হল আমাদের সমাজে যে পরিবর্তনগুলো ঘটছে, পরিবর্তনগুলো শনাক্ত করা, বুঝতে পারা এবং জনগনকে ও তরুণদের বোঝানো এটা হল বুদ্ধিবৃত্তির কাজ। এটা সৈনিকতার কাজ, এটা লম্বা যুদ্ধ। যেটার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাই। আমরা আজকে যেসব স্লোগান শুনছি, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ বলছি; দিল্লি কিন্তু আমাদের একমাত্র সমস্যা না, দিল্লি অবশ্যই সমস্যা। কারণ ইমিডিয়েটলি দিল্লির অধীনে গত ফ্যাসিস্ট শক্তিকে দেখেছি। দিল্লির অধীনে বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ছিল, যার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। এখানে যে ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল, দিল্লি তাদের এখানে রেখেছিল। কিন্তু এ ঘটনা যে সম্প্রতি ঘটেছিল তা কিন্তু নয়। যখন স্বাধীনতা অর্জন করি, তখন জনগণ নিজেদেরকে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে গঠন করতে পারি নাই। এ ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। আমরা কিন্তু গঠন করে পারি নাই। ৭০ এর নির্বাচন যখন হয় তখন পাকিস্তানের সংবিধান লেখার জন্য গিয়েছিল আওয়ামী লীগ। পাকিস্তানের সংবিধান লিখবার জন্য তারা নির্বাচনে গিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সংবিধান লেখবার আগেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আর তারা ফিরে এসে আমাদের জন্য সংবিধান লিখে। সেই সংবিধান এখনও বাতিল করা হয়নি। সে সংবিধান অনুযায়ী যিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত এখন তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। শুধু তাই নয়, যেসকল আইনগুলো আছে সেই ইংরেজ আমল থেকে সেগুলো বহাল আছে। যেসকল তরুণ বীর ভাইয়েরা পঙ্গু হয়েছে, শহীদ হয়েছে এরপরও আমরা এসব বদলাতে পারিনি।