বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪০ অপরাহ্ন

৩১ ডিসেম্বর সংবিধান বাতিলের ঘোষণা আসতে পারেঃ ফরহাদ মজহার।

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

৩১ ডিসেম্বর সংবিধান বাতিলের ঘোষণা আসতে পারেঃ ফরহাদ মজহার।

৩১ ডিসেম্বর সংবিধান বাতিলের ঘোষণা আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রচিন্তক ও গবেষক ফরহাদ মজহার। একইসঙ্গে তিনি দেশের তরুণদের রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করারও দাবি তুলতে পরামর্শ দিয়েছেন।

রবিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত সহযোদ্ধাদের সম্মাননা ও পুনর্বাসনের এ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সচেতন নাগরিক সমাজ এ অনুষ্ঠানে আয়োজন করেন।

সেখানে ফরহাদ মজহার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান যে ঘটল, এটি একটি অভূতপূর্ব ঘটনা সন্দেহ নাই। এ যে একটা ঘটনা আসছে, ঘটতে যাচ্ছে এ সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে আমার লেখালেখিতে বলছিলাম। অনেকে হাসাহাসিও করেছেন, বিশ্বাসও করেন নাই। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আমার যে বইটি বের হয়েছে ‘ গণঅভ্যুত্থান ও গঠন’, সেটি কাকতালীয় হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ঘটে গিয়েছে। এর কারণগুলো হল আমাদের সমাজে যে পরিবর্তনগুলো ঘটছে, পরিবর্তনগুলো শনাক্ত করা, বুঝতে পারা এবং জনগনকে ও তরুণদের বোঝানো এটা হল বুদ্ধিবৃত্তির কাজ। এটা সৈনিকতার কাজ, এটা লম্বা যুদ্ধ। যেটার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাই। আমরা আজকে যেসব স্লোগান শুনছি, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ বলছি; দিল্লি কিন্তু আমাদের একমাত্র সমস্যা না, দিল্লি অবশ্যই সমস্যা। কারণ ইমিডিয়েটলি দিল্লির অধীনে গত ফ্যাসিস্ট শক্তিকে দেখেছি। দিল্লির অধীনে বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ছিল, যার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। এখানে যে ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল, দিল্লি তাদের এখানে রেখেছিল। কিন্তু এ ঘটনা যে সম্প্রতি ঘটেছিল তা কিন্তু নয়। যখন স্বাধীনতা অর্জন করি, তখন জনগণ নিজেদেরকে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে গঠন করতে পারি নাই। এ ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। আমরা কিন্তু গঠন করে পারি নাই। ৭০ এর নির্বাচন যখন হয় তখন পাকিস্তানের সংবিধান লেখার জন্য গিয়েছিল আওয়ামী লীগ। পাকিস্তানের সংবিধান লিখবার জন্য তারা নির্বাচনে গিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সংবিধান লেখবার আগেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আর তারা ফিরে এসে আমাদের জন্য সংবিধান লিখে। সেই সংবিধান এখনও বাতিল করা হয়নি। সে সংবিধান অনুযায়ী যিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত এখন তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। শুধু তাই নয়, যেসকল আইনগুলো আছে সেই ইংরেজ আমল থেকে সেগুলো বহাল আছে। যেসকল তরুণ বীর ভাইয়েরা পঙ্গু হয়েছে, শহীদ হয়েছে এরপরও আমরা এসব বদলাতে পারিনি।

ফরহাদ মজহার ৩১ ডিসেম্বর আরেকটি ঘোষণা আসছে তরুণদের থেকে উল্লেখ করে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কাছে জানতে চান- কী ধরনের ঘোষণা আসছে ৩১ তারিখ? তখন তারা জানেন না বলে জানালে তখন তিনি বলেন, এ যে- না জানা এটাকে কি গণতন্ত্র বলে। জনগণের অভিপ্রায় আপনারা কায়েম করবেন। লড়লেন, জীবন দিলেন। কিন্তু ৩১ তারিখ কী আপনারা আলোচনা করবেন এটা জানেন না। তাহলে কী ঘোষণা দিবেন, এটা দুঃখজনক। গণতন্ত্র অবশ্যই জনগণের সঙ্গে অন্তর্গত করে সিদ্ধান্ত নেয়া।
তরুণদের আমি চিনি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, তারা কী ঘোষণা দিবেন তা আমি মোটামুটি জানি উল্লেখ করে এ রাষ্ট্রচিন্তক বলেন, আপনারা রাস্তায় নেমে স্লোগান দিয়েছেন যে, সংবিধান বাতিল চান। চুপ্পুর অপসারণ চান। আমরা আশা করতে পারি ৩১ ডিসেম্বর সম্ভবত এসব কিছুই বলবেন। কিন্তু এটা বললেন, এরপর কী রাষ্ট্রটা আগেরটাই থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে- নতুন করে বাংলাদেশকে গঠন করতে হবে। শব্দটা গঠন, শব্দটা সংবিধান না। সরকার ব্যবস্থা, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে, বিচার ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, চিন্তা সমস্ত কিছু নতুন করে গঠন করতে হবে। আপনারা স্লোগান দিচ্ছেন, মুজিববাদ নিপাত যাক, সাধারণ জনগন মুজিববাদ বুঝবে? আমরা চাইছি আমাদের সমাজ থেকে ফ্যাসিস্ট চিন্তাভাবনা ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিপাত যাক। শুধু তাই নয়, ইসলামবিদ্বেষী যে ধারাটি গড়ে উঠেছে আমাদের দেশে, সেটি বন্ধ করতে হবে। ওই যে মুজিববাদ গঠে উঠেছিল, আমাদের বলছে সেক্যুলার হওয়া কথা, সেগুলো নিপাত যেতে হবে। সেক্যুলার রাষ্ট্র হতে পারে। যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সেক্যুলার হতে পারে কিন্তু সেক্যুলারের কথা বলে ৫০ বছরের বেশি সময় আমরা লড়াই করছি বাংলাদেশে তা ইসলাম নির্মূলের লড়াই। ফ্যাসিবাদের পতনের ফলে কিছুটা হলেও মুজিববাদ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু ফ্যাসিস্ট চিন্তাভাবনা আছে, সেগুলো ত মুজিববাদের কথা বলে না। তারা বলে, বাংলাদেশে ৯০ভাগ মুসলমান, এটা মুসলামের রাষ্ট্র হতে হবে। বাঙালিরা যা বলত তার উল্টা পিঠ৷ তারা বলত এখানে সব বাঙালি, এখানে ইসলাম থাকতে পারবে না। আর এরা বলে এখানে আমরা মুসলিম এখানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সনাতন ধর্মালম্বীরা থাকতে পারবে না। আগে দাঁড়িটুপি থাকলে বলত জঙ্গি, সন্ত্রাসী। আর এখন একটু গেরুয়া দেখলেই বলি সন্ত্রাসী। এটা দিয়ে কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে পারব না।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102