শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

শেখ হাসিনার জব্দ করা স্বর্ণ নিয়ে নতুন তথ্য দিল দুদক

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

রাজধানীর অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখার দুটি ভল্টে রাখা ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকার জব্দের পর নতুন তথ্য প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, এই স্বর্ণ শুধু ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়, বরং তার বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও রয়েছে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘ভল্টে রাখা নথি ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জব্দকৃত স্বর্ণালংকারের মধ্যে কিছু অংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সম্পদ, আবার কিছু অংশ তার বোন ও মেয়ের ব্যক্তিগত সম্পদ।’

তিনি আরও জানান, ‘স্বর্ণালংকারগুলো আলাদাভাবে মার্কিং (চিহ্নিত) করা ছিল। আমাদের অনুসন্ধানকারী দলের কর্মকর্তারা এখন ধাপে ধাপে স্বর্ণগুলো আলাদা করবেন। তারপর নির্ধারণ করা হবে কার কোন অংশের স্বর্ণ।’মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত অংশগুলো এই অনুসন্ধানের আওতায় আসবে। অন্য অংশগুলো হয়তো অন্য অনুসন্ধানের অংশ হতে পারে।” তিনি সাংবাদিকদের জানান, স্বর্ণের প্রতিটি অংশের মালিকানা এবং বৈধতা যাচাই করা হচ্ছে।’

শেখ হাসিনার স্বর্ণের পরিমাণ কত তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বর্ণের পরিমাণ নির্ধারণের জন্যই আমরা ইনভেন্টরি প্রক্রিয়া শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যদের জমাকৃত সম্পদের বিবরণীর সঙ্গে মিলিয়ে যাচাই করা হবে এবং সেই অনুযায়ী স্বর্ণের মালিকানা নির্ধারণ করা হবে।’

দুদকের মহাপরিচালক স্বর্ণের বৈধতা বিষয়ে বলেন, ‘জব্দকৃত স্বর্ণ বৈধ কি অবৈধ তা সম্পূর্ণরূপে যাচাই করা হবে। সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যাবে স্বর্ণগুলো জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। যদি আয়ের উৎস জানা না যায় বা বৈধ আয়ের সঙ্গে মিল না থাকে, তবে সেটি অবৈধ সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে।’

আদালতের নির্দেশনার আলোকে এই সম্পদ জব্দের বিষয়ে তিনি জানান, এটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। আদালতের আলাদা আদেশ আছে। তবে আমাদের অনুসন্ধান দল আইন এবং বিধি অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আদালতের অনুমোদনের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘এই অনুসন্ধান একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। প্রতিটি স্বর্ণালংকারের মালিকানা ও বৈধতা যাচাই করতে সময় লাগবে। আমরা সকল প্রক্রিয়াই স্বচ্ছ ও নিয়মিত রাখার চেষ্টা করছি। দেশের জনগণ যেন নিশ্চিত হতে পারে যে, এই সম্পদ অনুসন্ধান কার্যক্রম আইনানুগ এবং সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’

দুদকের এই অনুসন্ধান অভিযান বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ এটি দেশের রাজনীতিক ও সামাজিকভাবে সংবেদনশীল একটি প্রসঙ্গের সঙ্গে যুক্ত। দেশের ইতিহাসে এটি এমন একটি ঘটনা যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের সম্পদের বৈধতা ও মালিকানা নিয়ে এত বিশদ অনুসন্ধান পরিচালনা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ, মহাপরিচালক বলেন, ‘এই অনুসন্ধান পুরোপুরি আইনের আওতায়, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হবে। যেকোনো তথ্য আমাদের কাছে আসবে, আমরা সেগুলো যাচাই করব এবং প্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102