হীমেল মিত্র অপু কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাব রক্ষক আশরাফুল মজিদের দূর্ণীতির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত করতে এসে তদন্তকারী কর্মকর্তা লালমমিরহাট সিভিলসার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় আরও অনেক অনিয়মের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন এবং এবং তার প্রমানও মিলেছে।৷
জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আশরাফুল মজিদসহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ঘটিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে ২ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। লালমনিরহাট সিভিলসার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় ও স্টেনো নারায়ন চন্দ্র বর্মন তদন্ত করে ইতিমধ্যে গত ৪ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা লালমনির হাটের সিভিলসার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় জানান, অধিদপ্তরের নির্দেশে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত করতে এসে আশরাফুল মজিদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কাগজপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখে ও যাচাই-বাছাই এবং পর্যালোচনা করে ভদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তিনি।
সিভিলসার্জন আরও বলেন, হিসাবরক্ষক আশরাফুল মজিদের অনিয়ম-দুর্নীতির অনেক অভিযোগ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বাইরেও আমরা আরও অনেক অভিযোগ পেয়েছি। সবগুলো অভিযোগের যাচাই-বাছাই করে প্রমানও পেয়েছি। সবমিলিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই অভিযোগকারীরা ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল প্রশাসনের টেন্ডারে অনিয়মসহ নানান দুর্নীতি নিয়ে দেশের অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়াও হাসপাতালের বিভিন্ন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা ঠিকাদার ও কুড়িগ্রামের সচেতন নাগরিকদের অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবর বিভিন্ন প্রমানসহ লিখিত অভিযোগ করেন । দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সেচ্ছাচারিতার কারণে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়ায় সাধারণ গরীব ও অসহায় রোগীরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দফায় দফায় বিভিন্ন অভিযোগ দাখিলের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক একটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয় । লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মেলেন্দু রায় এই তদন্তকাজে গত ১৫ জুলাই বুধবার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে তদন্তে আসেন।
তদন্তকালীন সময়ে তদন্তের সুবিধার্থে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঠিকাদার নুরুজ্জামান জামান এর নেতৃত্বে কতিপয় ঠিকাদার বিভিন্ন তথ্যসম্বলিত অভিযোগ পুনরায় প্রদান করেন এবং হাসপাতালের সাবিক কল্যানে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানান।
জানা গেছে, হিসাবরক্ষক কাম অফিস সহকারী আশরাফুল মজিদ এর বিরুদ্ধে
ঘুষ গ্রহন ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ সম্বলিত আবেদনপত্র হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী স্বাক্ষী হিসেবে তদন্ত টিমের কাছে দাখিল করেন।
জানা যায় যে, বর্তমান তত্বাবধায়ক ডাঃ আবু মোঃ জাকিরুল ইসলাম কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন টেন্ডার, কেনাকাটা, বদলী সংক্রান্ত বিষয়ে চরম অনিয়ম শুরু হয় ।যোগদানের শুরুতে ঔষুধ,চিকিৎসা সরঞ্জামাদী সহ বিভিন্ন সামগ্রীর টেন্ডার দরপত্রে ( স্মারক: জেনা :হাস:/কুড়ি/এমএসআর/২০১৯-২০২০/৯৮৪০ তাং ১৮.০৯,২০১৯) সুনির্দিষ্ট অনিয়ম নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেন মের্সাস শাহীন ফার্মেসী ও শাহজাহান চৌধুরী।
উল্লিখিত নানা বিষয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র হিসাবরক্ষক আশরাফুল মজিদের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২ সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্তটিম গঠন করা হয় বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা ডাঃ নির্মলেন্দু রায়।