জুলাই বিপ্লবের পর প্রথমবারের মতো আগামী সোমবার (১৪ এপ্রিল) উদ্যাপিত হবে পহেলা বৈশাখ। তাই এটিকে মাথায় রেখেই এবারের মোটিফগুলো সাজানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতিটি।
নানা আলোচনা-সমালোচনার পর ‘মঙ্গল শোভযাত্রা’ নামটি বাংলা নববর্ষের এবারের আয়োজনে থাকছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) আয়োজিত শোভাযাত্রার নতুন নাম ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজনে থাকবে বড়, মাঝারি ও ছোট মোটিফ। এর মধ্যে ৬টি থাকবে বড় মোটিফ। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফটি থাকবে সবার সামনে। এটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিকায়িত করবে। নারীর দাঁতাল এই মুখাকৃতিটির মাথায় খাড়া দুটো শিং রয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি দেখে কেউ যদি কারো সঙ্গে মিল খুঁজে পান, তা প্রত্যাকের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা সামগ্রিকভাবে ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান তুলে ধরছি।’
জানা যায়, বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় বড় মোটিফের মধ্যে থাকবে কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, ৩৬ জুলাই (টাইপোগ্রাফি), শান্তির পায়রা, পালকি, জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের পানির বোতল। রড দিয়ে ১৫ ফুটের এই পানির বোতল তৈরি করা হচ্ছে। বোতলটির ভেতরে আবার অনেকগুলো বোতল রাখা থাকবে। আন্দোলনের সময় যে প্রাণগুলো হারিয়ে গেছে, খালি বোতলগুলো তাদের প্রতীক।
এছাড়া অন্যান্য মোটিফের মধ্যে থাকবে ১০টি সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মাথা, ৮টি তালপাতার সেপাই, পলো ১০টি, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছের চাই, ৪টি পাখা, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল, ৫টি মাছের ডোলা এবং ১০০ ফুট লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস।
সেইসঙ্গে চারুকলার সম্মুখভাগের দেয়ালে আঁকা হচ্ছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ির মোটিফ। জয়নুল শিশু নিকেতন দেয়ালে আঁকা হচ্ছে সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী মাটির দেয়াল অমনরীতি অবলম্বনে চিত্র।
শুধু তাই নয়, এবারের শোভাযাত্রায় অন্যান্য মোটিফের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলমানদের লড়াই ও সংসামের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তাদের প্রতীক হিসেবে তরমুজের মোটিফ থাকবে।