বাগেরহাট জেলার পরিচিতি।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষে বাগেরহাট জেলার অবস্থান।এটি খুলনা বিভাগের অন্তর্গত।১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী বাগেরহাট মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়। বর্তমানে বাগেরহাট ০৯টি উপজেলা,৭৫টি ইউনিয়ন,১০৪৭ টি গ্রাম এবং ০৩ টি পৌরসভার সমন্বয়ে গঠিত একটি ’’এ’’ ক্যাটাগরীভূক্ত জেলা।
বাগেরহাট জেলার উত্তরে গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা, পশ্চিমে খুলনা জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পূর্বে পিরোজপুর জেলা ও বরগুনা জেলা।২২ডিগ্রী ৩২মিনিট থেকে ২২ ডিগ্রী ৫৬ মিনিট উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯ ডিগ্রী ৩২ মিনিট থেকে ৮৯ ডিগ্রী ৪৮ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশের জনপদের নামই বাগেরহাট। এ জেলার আয়তন ৫৮৮২.১৮ বর্গকিলোমিটার। বাগেরহাট জেলা সদরের অধিকাংশ ভৈরব নদীর পশ্চিম তীরে এবং শহরের বর্ধিত অংশ ভৈরবের দক্ষিণ প্রবাহ দড়াটানার পশ্চিম তীরে অবস্থিত।প্রাকৃতিক প্রভাব ও ভৌগলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে উপকূলীয় এলাকা দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন তীরবর্তী এবং অন্তবর্তী উপকূলীয় এলাকা।
বাগেরহাট শহর মসজিদের জন্য বিখ্যাত।বাগেরহাট ছিল সুন্দরবনের একটি অংশ।বন উজাড় করে বসবাসের উপযোগী করেছেন। বাগেরহাট শহরকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
1973 সালে ইউনেস্কো এই সম্মান প্রদান করে।বাগেরহাটের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো খাঞ্জেলী দীঘি, ষাট গম্বুজ মসজিদ, সিংগাইর মসজিদ, নয়গম্বুজ মসজিদ, জিন্দাপীর মসজিদ, অযোধ্যা মঠ/কোদলা মঠ।বাগেরহাটে একটি জাদুঘর রয়েছে।বাগেরহাট জেলার অধিকাংশ অঞ্চলে বন সরিয়ে জনপদ গড়ে উঠেছিল।
পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা হতে আগত ব্যক্তিবর্গের আঞ্চলিক ভাষার প্রভাবে এ অঞ্চলের বিভিন্ন জনপদের আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।এ জেলার গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবার আর্দশ পরিবারের দৃষ্টান্ত। কৃষি তাদের প্রধান পেশা।ভাত ও মাছ এ জেলার প্রধান খাদ্য।ভাটি অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গীত বিশেষ করে ভাটিয়ালী গান এখানে অত্যন্ত প্রিয়।দড়াটানা, পানগুছি, মধুমতি, পশুর, হরিণঘাটা, মোংলা, বলেশ্বর, ভাংগ্রা, গোসাইরখালী ইত্যাদি নদীসমূহ বাগেরহাটকে করেছে নদী-বিধৌত।
বাগেরহাট জেলার একমাত্র খনিজ সম্পদ পিট কয়লা।বাগেরহাট জেলায় প্রচুর নারিকেল,সুপারি ও চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়।এছাড়াও সুন্দরবন থেকে প্রচুর পরিমান প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়া যায় যেমন, মধু,গোলপাতা,কাকড়া,বিভিন্ন ধরনের মাছ ও কাঠ।সুন্দরবনের বাঘ ও চিত্রা হরিন বিশ্ববিখ্যাত।বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত পত্রিকার মধ্যে অন্যতম হলো দৈনিক সুন্দরবন,
দৈনিক দড়াটানা, সাপ্তাহিক দক্ষিণবার্তা, সাপ্তাহিক বনাঞ্চল ইত্যদি।বাগেরহাটে ২ টি স্টেডিয়াম রয়েছে।বাগেরহাটের উল্লেখযোগ্য খেলা হলো ক্রিকেট,ফুটবল, হ্যান্ডবল, ভলিবল, সাঁতার, কাবাডি ও এ্যাথলেটিক্স এছাড়া নৌকা বাইচ ও ষাঁড়ের লড়াই ইত্যাদি।বাগেরহাটের প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম হলো বিধু ভূষণ বসু (বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনেরমুখপাত্র), ড. নীলিমা ইব্রাহীম(লেখিকা), অধ্যাপক আব্দুলস্নাহ আবু সায়ীদ (সাহিত্যিক ও গবেষক), রুদ্র মোঃসহিদুল্লাহ(কাব্যগ্রন্থ রচয়িতা), সরদার আনোয়ারুল ইসলাম(ভাষা সৈনিক), শেখ কামরুজ্জামান টুকু(মুজিব বাহিনী প্রধান,খুলনা অঞ্চল)।
#সংগৃহীত