ছুটিতে বা অফিসিয়াল ট্যুরে হোটেল-মোটেলে থাকার সময় নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন। বিশেষ করে রুমের ভেতর লুকানো ক্যামেরা থাকার ঝুঁকি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
অসাধু ব্যক্তি বা চক্র গোপনে এসব ক্যামেরা বসিয়ে ব্যক্তিগত মুহূর্ত ধারণ করে প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইলসহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহার করে থাকে। তবে সচেতনতা এবং সামান্য পর্যবেক্ষণেই এসব গোপন ক্যামেরা শনাক্ত করা সম্ভব। জেনে নেওয়া যাক তার কয়েকটি পদ্ধতি!
১. ফোনে কথা বলার সময় অস্বাভাবিক শব্দ হলে সতর্ক হোন
ওয়্যারলেস ক্যামেরা সাধারণত রেডিও সিগন্যাল ছাড়ে। তাই ফোনে কথা বলতে বলতে রুমে হাঁটলে নির্দিষ্ট জায়গায় ‘বজবজে’, ‘বিপ’, বা ‘ক্র্যাক’ ধরনের শব্দ হতে পারে। এটি লুকানো রেকর্ডিং ডিভাইসের উপস্থিতির ইঙ্গিত দিতে পারে।
২. আয়নার ওপর ‘ফিঙ্গার টেস্ট’ করুন
টু-ওয়ে মিরর অর্থাৎ একদিকে সাধারণ আয়না, অন্যদিকে দৃশ্যমান কাচ—এমন আয়না অনেক সময় নজরদারিতে ব্যবহার করা হয়। আঙুল আয়নার গায়ে স্পর্শ করলে যদি প্রতিবিম্বে আঙুলের ডগা একদম ছুঁয়ে যেতে দেখা যায়, তাহলে আয়নাটি সন্দেহজনক হতে পারে।৩. ফোনের টর্চলাইট দিয়ে চারপাশ স্ক্যান করুন
ঘরের সব লাইট বন্ধ করে ফোনের ফ্ল্যাশলাইট চালু করুন। ক্যামেরা লেন্স আলো পেলে সাধারণত নীল বা বেগুনি রঙের ছোট প্রতিফলন দেখা যায়। অ্যালার্ম ক্লক, শো-পিস, চার্জার সকেট, ফ্যান, ভেন্ট, স্মোক ডিটেক্টর—এসব জায়গায় ভালোভাবে দেখুন।
৪. ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক স্ক্যান করুন
হোটেলের ওয়াই-ফাইতে কানেক্ট হয়ে ‘Fing’ বা ‘Network Scanner’ অ্যাপের মাধ্যমে রুমে কী কী ডিভাইস সংযুক্ত আছে তা দেখুন। কোনো ‘IP Camera’ বা অচেনা ডিভাইস দেখা গেলে সতর্ক হোন। পরে ওয়াই-ফাই বন্ধ করে আবার স্ক্যান করে দেখুন ডিভাইসটি অদৃশ্য হয় কি না।
৫. হিডেন ক্যামেরা ডিটেকশন অ্যাপ ব্যবহার করুন
আইফোনে ‘Hidden Camera Detector’ বা অ্যান্ড্রয়েডে ‘Glint Finder’ ব্যবহার করলে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল শনাক্ত করা যায়। কোনো জায়গায় সিগন্যাল অস্বাভাবিক হলে সেটি ভালোভাবে পরীক্ষা করুন।৬. অন্ধকারে ইনফ্রারেড লাইট খুঁজে দেখুন
বেশিরভাগ লুকানো ক্যামেরায় ইনফ্রারেড (IR) লাইট থাকে, যা খালি চোখে দেখা না গেলেও অন্ধকারে ফোনের ক্যামেরায় ছোট লাল বা সবুজ বিন্দুর মতো দেখা যেতে পারে। জানালা ঢেকে আলো নিভিয়ে স্ক্যান করলে সহজেই তা ধরা পড়তে পারে।
হোটেল বা রিসোর্টে থাকার সময় সামান্য সচেতনতা আপনাকে বড় ধরনের ঝামেলা থেকে রক্ষা করতে পারে। গোপন ক্যামেরার সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় প্রশাসনকে জানান।