যুক্তরাষ্ট্র সফরের দ্বিতীয় দিনে বুধবার (১৯ নভেম্বর) ক্যাপিটল হিলে কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। এই সফরের উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী করে তোলা।
এ সময় তার বিরুদ্ধে থাকা মানবাধিকার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমালোচনা পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা জানান।
এমনকি ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবরাজের পক্ষে তিনি প্রকাশ্যে সাফাইও গান। যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছিল, যুবরাজের অনুমোদনেই তাকে হত্যার অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজকে যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দেখা হতো। এ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগের কারণে কংগ্রেসের অনেকেই তার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন এবং বিভিন্ন সময় জবাবদিহির দাবি তুলেছিলেন। তবে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তার ভাবমূর্তি ফিরে পেয়েছেন। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন, সিনেটে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিম রিশ এবং প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্টসহ কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, যিনি একসময় সৌদি যুবরাজের কড়া সমালোচক ছিলেন, গত মঙ্গলবার ওভাল অফিসের বৈঠকে তিনি যুবরাজের ঠিক কাছেই বসেছিলেন।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই বৈঠকে মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রশংসা করেন। তিনি বারবার বলেন, যুবরাজের মতো বন্ধু পাওয়া তার জন্য সম্মানের। তবে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল একেবারেই ভিন্ন। সে সময় ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং খাসোগি হত্যাকাণ্ডের কারণে মার্কিন আইনপ্রণেতারা ক্ষুব্ধ ছিলেন। কংগ্রেস থেকে বারবার যুবরাজকে জবাবদিহি করার দাবি উঠেছিল। তবে এবার সেই কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলেই তাকে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে স্বাগত জানানো হলো, যদিও অন্যান্য বিশ্বনেতাকে যেভাবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অভ্যর্থনা দেওয়া হয়, তার ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায়নি। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এই অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্ট বৈঠকটিকে ‘অসাধারণ’ বলে অভিহিত করেন এবং জানান যে, সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ সংস্কার, ইসরায়েল-গাজা পরিস্থিতি, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং চীনা গুপ্তচরবৃত্তি মোকাবিলাসহ নানা বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স