সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোবরা গ্রামের সোনাপাড়া এলাকায় নদীর ভাঙনকবলিত স্থান থেকে অল্প দূরেই কয়েকটি ট্রলার দাঁড় করিয়ে শামুক উত্তোলন চলছে। পাইপের মাধ্যমে মাটি ও শামুক টেনে তুলে শামুক আলাদা করা হচ্ছে আর বালু-মাটি নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে নদীর প্রবাহ আরও তীব্র হয়ে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
গোবরা গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, “আমাদের বাড়ির পেছন থেকে প্রতিদিন ৮-১০টি ট্রলারে শামুক তোলা হয়। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা হয় না। প্রতিবাদ করলে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ট্যাগ লাগানো হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।”
অন্য এক বাসিন্দা বলেন, শনিবার সকালে তার বসতভিটার পাশে শামুক উত্তোলন করা হলে গ্রামবাসী বাধা দেন। কিন্তু পরে জানতে পারেন, এই চক্রের পেছনে প্রভাবশালী নেতা ও সাংবাদিক পরিচয়ধারী কয়েকজন রয়েছেন। এর পর থেকেই এলাকাবাসী নানা হুমকি পাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে বলেন, “আমরা নদীর চরে মাছ ধরে জীবন চালাই। শামুক উত্তোলনের কারণে চর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাছও কমছে। আমরা বেকার হয়ে যাচ্ছি।”
এলাকাবাসী জানান, গত এক দশকে তিনবার কপোতাক্ষের ভাঙনে গোবরা এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, অফিস–আদালত, গাছপালা সব ভেসে গেছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার শামুক উত্তোলনের কারণে নতুন করে নদীভাঙন দেখা দিলে আরও বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় চলছে এই অবৈধ কার্যক্রম। তারা প্রতিরোধ করলে উত্তোলনকারীরা পালিয়ে গেলেও আবার শুরু করার হুমকি দিচ্ছে।
কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা নাছির উদ্দীন বলেন, “কপোতাক্ষ নদ থেকে শামুক উত্তোলন অপরাধ। অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”
এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, অবৈধ শামুক উত্তোলন বন্ধ না হলে আবারও নদীভাঙন ও বেঁড়েবাঁধ ধসে উপকূলের হাজারো মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়বে।