চীন সরকারের ভিসা নীতিতে নজিরবিহীন ছাড় দেওয়ায় ধীরে ধীরে আবারও বিদেশি পর্যটকরা ফিরতে শুরু করেছে চীনে। বর্তমানে বিশ্বের ৭৪টি দেশের নাগরিকরা চীনে ৩০ দিন পর্যন্ত ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারছেন, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
আগামী ১৬ জুলাইয়ের পর আজারবাইজানকেও তালিকায় যুক্ত করা হবে।
চীনা ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২ কোটির বেশি বিদেশি পর্যটক ভিসা ছাড়া চীনে প্রবেশ করেছেন যা মোট আগত বিদেশিদের এক-তৃতীয়াংশ এবং গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।
তবে এখনো অধিকাংশ পর্যটনকেন্দ্রে দেশীয় দর্শনার্থীদের ভিড়ই বেশি। যদিও গাইড ও ট্যুর কোম্পানিগুলো বড় ধরনের বিদেশি ভ্রমণকারীর ঢল সামলাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভিসা ছাড়া ভ্রমণ এখন অনেক সহজ হয়েছে বলে জানালেন জর্জিয়ান নাগরিক জর্জি শাভাদজে, যিনি বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় বসবাস করেন। বেইজিংয়ের ঐতিহাসিক “টেম্পল অব হেভেন” দর্শনের সময় তিনি বলেন, “ভিসার জন্য আবেদন করা ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা অনেক ঝামেলার কাজ — এই ছাড়টা সত্যিই উপকারে এসেছে।”
করোনা মহামারির কড়াকড়ি তুলে নেওয়ার পর চীন ২০২৩ সালের শুরুতে সীমান্ত খুলে দেয়। তবে সে বছর মাত্র ১.৩৮ কোটি বিদেশি পর্যটক চীন ভ্রমণ করেন, যা ২০১৯ সালের তুলনায় অর্ধেক।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চীন প্রথমবারের মতো ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও মালয়েশিয়ার নাগরিকদের জন্য এক মাসের ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের সুযোগ দেয়। এরপর প্রায় পুরো ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকার পাঁচ দেশ, উজবেকিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দেশকে এক বছরের পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
নরওয়ের পর্যটক ওইস্টেইন স্পোরশেইম বলেন, “আগে চীনা ভিসা পেতে ওসলোতে দূতাবাসে দুইবার যাওয়া লাগত — এটা ছিল সময়সাপেক্ষ ও খরচসাপেক্ষ কাজ, বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে।”
পর্যটন খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন ‘ওয়াইল্ড চায়না’ নামক বিলাসবহুল ভ্রমণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনি ঝাও। তার মতে, “নতুন ভিসা নীতিগুলো আমাদের জন্য ১০০% লাভজনক,” এবং তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা এখন মহামারির আগের তুলনায় ৫০% বেড়েছে।