গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল সরকার পদক্ষেপ না নিলে দেশটির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ইসরায়েল সম্প্রতি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতি স্বীকার করে গাজায় ন্যূনতম খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ প্রবেশের অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছিল, যদিও তারা সেখানে তীব্র সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট একটি নতুন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)-এর নিয়ন্ত্রণে গাজায় সামান্য যে পরিমাণ সাহায্য ঢুকছে, তার সঙ্গে লুটপাট ও সহিংসতার ঘটনাও ঘটছে।
গাজার ফিলিস্তিনিরা যখন গভীর ক্ষুধার সংকটের সম্মুখীন, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব থাকতে পারে না। তার এই মন্তব্য ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়িয়ে তুলছে, যা প্রায় তিন মাস ধরে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং সাহায্য সংস্থাগুলো সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে। শুক্রবার (৩০ মে) সিঙ্গাপুর সফরকালে তিনি বলেন এসব কথা বলেন।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়ংয়ের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেন, মানবিক অবরোধ স্থলভাগে একটি অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি করছে। তিনি আরও বলেন, যদি মানবিক পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আগামী কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসে, তাহলে আমাদের সম্মিলিত অবস্থান কঠোর করতে হবে। এর মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত দেন যে, ফ্রান্স ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
ম্যাক্রোঁ তার মন্তব্যে ইসরায়েল যে মানবাধিকারকে সম্মান করছে, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তবে আমি এখনও আশা করি যে ইসরায়েল সরকার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে এবং আমরা অবশেষে একটি মানবিক প্রতিক্রিয়া পাব।
ফরাসি নেতা বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কেবল একটি নৈতিক কর্তব্য নয় বরং একটি রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। যদিও তিনি যোগ করেন যে, এর প্রতিষ্ঠার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তার এই মন্তব্য চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতির পর এসেছে, যেখানে তারা গাজার নিয়ন্ত্রণ দখলের বা এর জনসংখ্যাকে বিতাড়িত করার যেকোনো ইসরায়েলি পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছিলেন।
প্যারিস একটি শর্তসাপেক্ষ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য গতি সঞ্চার করতে চাইছে, যার জন্য অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রয়োজন হবে। ফরাসি কর্মকর্তারা জাতিসংঘের একটি সম্মেলনের আগে এই পদক্ষেপের বিষয়টি বিবেচনা করছেন। ফ্রান্স এবং সৌদি আরব ১৭-২০ জুন এই সম্মেলনের সহ-আয়োজক। এই সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একটি রোডম্যাপের পরামিতি নির্ধারণ করা হবে, একই সাথে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি মাথায় রাখা হবে।