গত রবিবার (৬ এপ্রিল) আত্মহত্যার মধ্য দিয়েই শেষ হয় তার স্বপ্নের পথচলা।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সিদ্দিক আলীর মেয়ে সুলতানা পারভিন ওরফে সোহা (২৩)। ১০ মাস আগে বিয়ে হয় জাপান প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম অনিকের সঙ্গে। বিয়ের পর স্বামীকে পেয়ে হাসিমুখে সংসার শুরু করেছিলেন তিনি। অনিক স্ত্রীর ভিসার সকল কার্যক্রম শেষ করেছিলেন, ঠিক তখনই নেমে আসে অমানিশার ছায়া
অনিকের বোন জামাই পর্তুগাল প্রবাসী মোহাম্মদ নাহিন শেখ ওরফে মৃদুল, এই বিয়ে মেনে নেননি। অভিযোগ, তিনিই পরিকল্পিতভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে সুলতানার ছবি দিয়ে তৈরি করেন একটি আপত্তিকর ভিডিও। সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেন একটি ফেক আইডি থেকে। প্রথমে সুলতানাকে এবং পরে তার স্বামী অনিককেও পাঠানো হয় সেই ভিডিও।
এই ভিডিওর কারণে সংসারে শুরু হয় ভুল বোঝাবুঝি, মানসিক নির্যাতন। পরবর্তীতে জানা যায় ভিডিওটি ভুয়া, এবং এর পেছনে ছিলেন নাহিন শেখ। তবে ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আত্মহত্যার আগে সুলতানা পারভিন একটি তিন পাতার সুইসাইড নোট রেখে গেছেন, যেখানে তিনি পর্তুগাল প্রবাসী নাহিন শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং ন্যায়বিচারের আবেদন জানান।
সুলতানার মা ফিরোজা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে ওরা শেষ করে দিয়েছে এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
সুলতানার পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সুলতানার ভাই নৌবাহিনীর কোষ্টগার্ডে কর্মরত আলিমুল ইসলাম বলেন, “আমার বোন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। আমরা ওকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে ভেতরে ভেঙে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে আমাদের সকলের অগোচরে চিরদিনের জন্য চলে গেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।”
সুলতানার স্বামী আশরাফুল ইসলাম অনিক ভিডিও কলে সাবাদিকদের বলেন, “আমি ওকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। সব কাগজপত্র ঠিক করে ওকে জাপানে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বোন জামাই মেনে নেয়নি। সে পরিকল্পনা করেই এসব করেছে। আমি আইনি ব্যবস্থা নেব, এ ঘটনার বিচার চাই।”
পর্তুগাল প্রবাসী মোহাম্মদ নাহিন শেখ ওরফে মৃদুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি