রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন

লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজে ঈদে দর্শনার্থীদের ঢল 

বিশাল মাহমুদ জিম,লালমনিরহাট সদর প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বিনোদনের জন্য লালমনিরহাটের একমাত্র সর্ববৃহৎ বিনোদনের জায়গা তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় মানুষের মিলনমেলা পরিণত হয়েছে। ঈদের দিন এবং তার পরের দিনগুলোতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দোয়ানী ব্যারাজ এলাকায় অবস্থিত এর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমিয়েছেন। তবে বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষ ছোট বড় সকলের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এবং তিস্তার মনোরম দৃশ্য দেখতে রংপুর, বিভাগের ৮ দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম নীলফামারী লালমনিরহাট সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছেন তিস্তা ব্যারাজে। ব্যারাজের মূল কাঠামো, নদীর প্রবাহ, সবুজ প্রকৃতি আর খোলা আকাশ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন হাজারো মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যারাজ এলাকা ও সংলগ্ন পার্ক এবং চরে মানুষের কোলাহল আর উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল। অনেকে নদীর ধারে বসে বা চরে ঘুরে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। কেউ কেউ ছবি তুলে বা ভিডিও করে মুহূর্তগুলো ধরে রাখছেন।
ঈদের এই আনন্দ শুধু তরুণদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রবীণরাও এসেছেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুটা সময় কাটাতে। সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য, যেখানে নদীর জলে সোনালী আভা পড়েছে। দিনের শেষে যখন সূর্য ডোবে, তখন তিস্তা ব্যারেজের চারপাশের রং বদলে যায়। এই দৃশ্য যেন ঈদের আনন্দের এক পরিপূর্ণ রূপ।
তিস্তার পাড়ে রঙিন ঘুড়ি দোকানপাটসহ স্থানীয় হস্তশিল্পের পসরা নিয়ে বসেছেন কয়েকজন বিক্রেতা। ঈদের এই মিলনমেলায় স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়েছে। হস্তশিল্পের দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের ভিড়।
তিস্তা নদীতে কিছুটা পানি থাকায় ঈদের আনন্দে গা ভাসিয়েছে ছোটরাও। ছোটদের আনন্দ যেন বাঁধ মানছে না। ঈদের নতুন পোশাকে তারা তিস্তার পাড়ে দুরন্তপনা করছে, কেউবা আবার নৌকায় চড়ে উপভোগ করছে প্রকৃতির রূপ।রংপুর থেকে আসা এক দর্শনার্থী সবুজ বলেন “পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। জায়গাটা খুব সুন্দর,আসলেই বিশ্বাস করতে পারতাম না এখানে না এসে প্রকৃতি যে এত সুন্দর। কিন্তু টয়লেটের কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে মহিলাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। এত বড় একটা পর্যটন স্পটে এই অব্যবস্থা মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর ঈদ বা অন্যান্য ছুটিতে তিস্তা ব্যারাজে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। কিন্তু সে অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা, বিশেষ করে শৌচাগার ও পরিচ্ছন্নতার দিকে কর্তৃপক্ষের তেমন নজর নেই। দর্শনার্থীদের এই ভোগান্তি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার নির্মাণ বা অস্থায়ীভাবে হলেও পরিচ্ছন্ন টয়লেটের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলে তিস্তা ব্যারাজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্রের আকর্ষণ কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। দর্শনার্থীদের আনন্দযাত্রা যাতে ভোগান্তিতে পরিণত না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি।
ভারতী থেকে ঘুরতে আসা নারী দর্শনার্থী লুব্বা হাসান বলেন, চমৎকার স্থান, কিন্তু এই জায়গাটি আরো সুন্দর করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাহলে দেশ বিদেশের অনেক মানুষ এখানে ঘুরতে আসবে বলে মনে করছি। বিষেশ করে আমরা যারা বাহিরে দেশ থেকে ঘুরতে আসি তারা যেন নিজ দেশে ফিরে এই দেশের দেশের অন্যতম বৃহৎ সেচ প্রকল্প ও দর্শনীয় স্থান তিস্তা ব্যারাজের কথা বলতে পারি।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মাহমুদুন্নবী বলেন, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারাজে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ব্যাপক পরিষদ সাদা পোশাকের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন,পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বিনোদনের খোঁজে দেশের অন্যতম বৃহৎ সেচ প্রকল্প ও দর্শনীয় স্থান।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102