সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫। ময়মনসিংহে পাচারের সময় মানব কঙ্কাল উদ্ধার, গ্রেপ্তার- ২। কোকোর স্মৃতিতে ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত। বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নাম পরিবর্তন। কালিহাতীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ট্রাকসহ ৬ ডাকাত গ্রেফতার। বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজনঃ ড. আবুল কাশেম। বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্তে মেট্রো চালু করবে ভারত। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ৪ স্পটে দুর্ঘটনার কবলে ১০ গাড়ি, নিহত ১, আহত ১৫। নরসিংদীতে ছাত্রদলকর্মীকে গুলি করে হত্যা।

তারাকান্দায় ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে আনন্দ র‍্যালি।

প্রভাষক  জাহাঙ্গীর আলম,তারাকান্দা উপজেলা সংবাদদাতা( ময়মনসিংহ)।
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪
তারাকান্দায় ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে আনন্দ র‍্যালি।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস । ১৯৭৫ সালের এই দিনে সিপাহি-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে দেশের তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পাল্টে গিয়েছিল। দেশ ও জাতি পেয়েছিল নতুন দিশা।
ময়মনসিংহের তারাকান্দায়  ‘১০ নভেম্বর( রবিবার ) বেলা ১১টা পর হতে ৭ নভেম্বার’র  ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে রাজপথ প্রদক্ষিণ বর্নাঢ্য আনন্দ র‍্যালিসহ মুক্ত মঞ্চে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চত্বরে আলোচনা সভা হয়েছে।
এসময় দেখা যায়, তারাকান্দা উপজেলা সদর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন হতে রাজপথে বর্নাঢ্য আনন্দ র‍্যালি নিয়ে মিছিলে- মিছিলে স্লোগান ধরে মিছিল নিয়ে তারাকান্দা রাজপথের পাশে বিভিন্ন পয়েন্ট -পয়েন্ট মিছিল জমায়েত হতে দেখা যায়। পরে বিএনপির সমর্থীত নেতাকর্মীদের গরুহাটা মাঠে জড়ো হতে দেখা যায়।
 গরুহাটা হতে যাত্রা শুরু করে স্লোগান মুখরিত  মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার হয়ে হালুয়াঘাট টু ময়মনসিংহ মহা সড়কের রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
তারাকান্দা উপজেলা  ভবনের সামনের  রাজপথ প্রদক্ষিণ করে স্লোগানে স্লোগানে থানার সামনে দিয়ে যাত্রা করে পরে আবার বড় পুল পর্যন্ত যেয়ে সেখান থেকে মোড় নিয়ে থানার সামনে দিয়ে এসে ঐতিহাসিক কড়ুইতলার শহীদ মিনারের চত্বরে মিছিলটি শেষ হয়।
শহীদ মিনারের  মুক্ত মঞ্চের চারপাশে হাজার জনতার ঢলের মাঝে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,
-প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তারাকান্দা উপজেলা ছাত্রদল, প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক তারাকান্দা উপজেলা যুবদল, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ময়মনসিংহ (উঃজেলা) যুবদল,  তারাকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ.এফ. এম ওয়াহিদুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি বলেন,  “নির্বাচন না দেওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে” ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে আমাদের যে বিজয় অর্জিত হয়েছে তা নিয়ে আত্বতুষ্টির কিছু নেই। এ বিজয় আংশিক।
তিনি বলেন, এই তারাকান্দা-ফুলপুরের মানুষ আগামী দিন বিএনপি হতে ভালো লোক নির্বাচিত করবেন এই আশাই করছি।  আমি এ.এফ. এম ওয়াহিদুজ্জামান। এই তারাকান্দার মাঝে সবচেয়ে পুরাতন বিএনপি কর্মী।
যারা আজকে এই তারাকান্দায় ফুলপুরে এমপি হতে চাচ্ছেন তারা আমার প্রিয় ভাই, প্রিয় নেতা।  তারা অতীতে  আমার সাথেই বিএনপির রাজনীতি করেছেন। যেমন আমার ছোট ভাই মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন শাকিল, খুব ভালো ছেলে। সেদিন সে টকটকে যুবক ছিল, ছাত্রনেতা ছিল সে দিন আমার সাথে হাত মিলিয়ে রাজনীতিতে এসেছিল ১৯৯৪ সানে।
আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই,  এই তারাকান্দা-ফুলপুরে সুন্দরভাবে বিএনপির রাজনীতি করে যান।
পাশাপাশি আমাদের আরেক নেতা মোতাহের হোসেন তালুকদার। তিনি উপজেলার চেয়ারম্যান  হয়েছিলেন। তবে বিএনপিতে এই তারাকান্দায়  উনার আগমন ১৯৯৫ সালে।
এই তারাকান্দার বাসস্ট্যান্ডে আমি মোতাহের হোসেন তালুকদারকে সেদিন ময়মনসিংহ আনন্দ মহন কলেজ গেইট হতে ধরে নিয়ে এসে তারাকান্দার ছাত্রদলের সৈনিকদের সাথে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম।
আমি উনাকে ধন্যবাদ জানাই এই ফুলপুর- তারাকান্দার মানুষের ভালো করে সেবা করে যান। আপনারা জানেন, এই ফুলপুর-তারাকান্দায় এ যাবৎ যতজন এমপি হয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন তারা শুধু নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তারা জনগণের কোন উন্নয়ন করেন নি। এই ফুলপুর তারাকান্দায় কোন উন্নয়নের ছোঁয়া আজও লাগেনি। তারা নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। জনগণ সব বুঝেন সব জানেন। আপনারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের সময় স্বাধীনভাবে মন খুলে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারবেন। আপনাদের অন্তরের নেতাকে নির্বাচিত করতে পারবেন।আপনাদের প্রিয় নেতাকে মূল্যায়ন করতে পারবেন। আপনারা অন্তর খুলে মন থেকে নেতা বাছাই করতে পারবেন। পরিশেষে আমি সকল সাংবাদিক কর্মী সকল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া দের ধন্যবাদ জানাই। আজকের আয়োজনে সকল স্তরের বিএনপি নেতাকর্মীদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাই এই জন্য যে ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসকে আমার নেতৃত্বে আমার ডাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় সম্মান দেওয়ার জন্য। ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসকে সফল করার জন্য। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, দেশনেত্রী আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জিন্দাবাদ, আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে জিন্দাবাদ, শহীদ জিয়া লও সালাম, লও সালাম।
৩নং কাকনি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও বিএনপি নেতা মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রদলনেতা ফুলপুর উপজেলা শাখা, তারাকান্দা উপজেলা যুবদলের  যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ময়মনসিংহ (উঃজেলা) জাতীয়তাবাদী প্রজন্মদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি স্বদেশ চন্দ্র সরকার (মিলন)’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এসময় নেতৃত্বে দেন, বিএনপি নেতা আল আমীন, সুমন তালুকদার আলমগীর হোসেন, ২নং বানিহালা ইউনিয়নের যুব নেতা আল-আমীন, বালিখা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মতিন মিয়া, মঞ্জুরুল হক, সাদ্দাম হোসেন আকন্দ, শহীদুল ইসলাম,  মাসুদ মিয়া, ফজল মিয়া, সিজার, সৈয়দ রুবেল, যুবদল নেতা চাঁন মিয়া, হারুন অর রশিদ, বদিরুজ্জামান, বাহারুল ইসলাম, সৈকত আলম( বিশকা ইউনিয়ন), যুবদল নেতা গোলাম রব্বানী।
এসময় মিছিলে উপস্থিত ছিলেন  বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবছর যেন এই কার্যক্রম চালু থাকে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। শুধু ফরদাবাদ নয়, পুরো উপজেলায় এর পরিধি ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান তিনি। এমন মহতী উদ্যোগের পাশে সবসময় থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এ.এফ. এম ওয়াহিদুজ্জামান।
৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসটি’র আয়োজন করেন তারাকান্দা উপজেলা  বিএনপি এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এখানে উল্লেখ্য যে,১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনার ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফ তার অনুসারী সেনা সদস্যদের নিয়ে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করেন। নিজেকে সেনাপ্রধান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ৬ নভেম্বর বঙ্গভবনে গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে করে মন্ত্রিসভা বাতিল ও জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন খালেদ। প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে বসান। ওই রাতেই সেনাবাহিনীর সাধারণ সিপাহিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
সেই অভ্যুত্থানে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়ে সর্বস্তরের জনতা রাজপথে নেমে আসে। সিপাহি-জনতার মিলিত সেই বিপ্লবে বন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। পাল্টা অভ্যুত্থান ঠেকাতে গিয়ে ৭ নভেম্বর সকালে কয়েকজন অনুসারীসহ প্রাণ হারান খালেদ মোশাররফ। অভূতপূর্ব এক সংহতির নজির সৃষ্টি হয় দেশের রাজনীতিতে। জিয়া চলে আসেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পটপরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।
এর পর থেকে ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। বিএনপি সরকারের আমলে এ দিনটিতে ছিল সরকারি ছুটি। তবে আওয়ামী লীগের দেড় যুগের শাসনামলে গত দেড় দশকেরও বেশি সময় দিবসটি স্বাচ্ছন্দ্যে উদযাপন করতে পারেনি বিএনপি।
তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এ বছর দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102