মোঃ আরমান হোসেন দিনাজপুর প্রতিনিধি :
৪ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবী জানিয়ে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ দিনাজপুর ও এএলআরডি দিনাজপুরের উদ্দ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ৩ অক্টোবর শনিবার জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও এএলআরডি‘র আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় নদী-জল-জলাশয় ও আদিবাসী জীবন বিষয়ক একটি মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মানিক সরেন।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ দিনাজপুর জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শিবানী উড়াও এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন,জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেন,বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি দিনাজপুর জেলা কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য রবিউল আওয়াল খোকা,ইউনাইটেড কমিউনিষ্টলীগের দিনাজপুরের সদস্য আখতার আজিজ,বাংলাদেশ সারি সারনা গাওতা‘র আহবায়ক চুন্নু টুডু,জ্যাপ পার্বুতীপুরের সভাপতি বিমল মুমুর্ প্রমুখ।
আলোচনার মুল প্রবন্ধে বলা হয়েছে নদী-জল-জলাশয়কে কেন্দ্র করেই আমাদের বাংলাদেশ। এখানকার জন জীবনও আদিকাল থেকে নদী-জল-জলাশয়কে কেন্দ্র করেই এগিয়ে গিয়েছে। শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৮০০ নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২৪,১৪০ কিলোমিটার জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই শত শত নদীর মাধ্যমে বয়ে আসা পলি মাটি জমে তৈরি হয়েছে। দেশের অধিবাসীদের জীবনযাত্রায় এসব নদ-নদী-জল-জলাশয়ের প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। বাংলাদেশে জীবন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসব নদ-নদী-জল-জলাশয়ের ভূমিকা অপরিসীম।
বাংলাদেশের নদী-জল-জলাশয় আমাদের গর্ব হলেও সেগুলো দখলের এক মহোৎসব চলছে দেশে। বর্তমান সরকার নদী-জল-জলাশয় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখলেও এখনো পর্যন্ত উল্লেখ্যযোগ্যভাবে সফলতা অর্জন করতে পারেনি। তবে এইগুলো শুধু দখলই নয়, দূষণের শিকারও। দেশের বেশির ভাগ নদী-জলাশয় দূষণের কবলে পড়েছে। কৃষি জমিতে প্রচুর রাসায়নিক সার প্রয়োগ হচ্ছে, যা বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে মিশে নদীতে গিয়ে পড়ছে। পরিবেশ অধিদফতর ১৭টি নদীর ৩৮টি স্থানের পানি পরীক্ষা করে দেখেছে, এসব নদীর পানি দূষিত ও ব্যবহারের অযোগ্য। নদী দূষণের কারণে পানিতে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, কার্বন, নিকেল, সিলিকনসহ ১৬-২০টি উপাদান হ্রাস পাচ্ছে, যা নদীতে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব উপাদানের অভাবে নদীর বহু প্রজাতির মাছ ও জলজ উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
সুপারিশসমুহের মধ্যে রয়েছে.-জল-জলাশয়ের আইনগত সুরক্ষা দিতে হবে, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় নদী-জলাশয় ব্যবস্থাপনায় আদিবাসীদের প্রাধান্য দিতে হবে, নদী-জলাশয় অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করতে হবে ও নদী-জলাশয়কে প্রকৃতির অংশ হিসেবে স্বাভাবিক আচরণে সাহায্য করতে হবে।