যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, সেখানে বসবাসরত প্রায় ২১ লাখ মানুষ বর্তমানে দুর্ভিক্ষের ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ রয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) প্রকাশিত আইপিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে গাজার খাদ্য পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটছে। যদিও এখনো সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়নি, তবে পরিস্থিতি ক্রমেই চরম বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে। ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধের কারণে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে বাসিন্দারা তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছেন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ—যা জনসংখ্যার প্রতি পাঁচজনের একজন—অনাহারের মুখোমুখি। আর ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৭১ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ ‘তীব্র’ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। আইপিসি এই অবস্থাকে “চরম মানবিক সংকট” হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছে, অবিলম্বে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গাজার অনেক পরিবার ইতোমধ্যেই চরম পরিস্থিতির মুখে বাধ্য হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কেউ ভিক্ষা করছেন, কেউ বা ময়লা-আবর্জনা কুড়িয়ে তা বিক্রি করে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
জাতিসংঘ, দাতা সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সরকারের সমন্বয়ে পরিচালিত আইপিসি আন্তর্জাতিকভাবে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকটের পূর্বাভাস ও মূল্যায়ন করে থাকে। সংস্থাটি গাজার বর্তমান পরিস্থিতিকে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ খাদ্য সংকট হিসেবে বিবেচনা করছে।