চট্টগ্রামে আদালতের এক বিচারককে লক্ষ্য করে জুতা ছুড়ে মারলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার এক আসামি। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতের এজলাসে এ ঘটনা ঘটে।
নয় মাস কারাগারে থেকেও জামিন না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বয়ং আসামি এজলাসেই বিচারককে জুতা নিক্ষেপ করার অপ্রীতিকর এক ঘটনা ঘটেছে। জামিনের জন্য বিচারকের কাছে আবেদন করেছিলেন আসামি মো. মনির খান। কিন্তু জামিন মঞ্জুর না রাখার ক্ষোভে বিচারকাজ চলাকালীনই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর এলাকার এই বাসিন্দা।
ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রামে বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুন্যালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিচারক জহিরুল কবির এজলাসে আসন গ্রহণ করার পরপরই আসামি এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান। এ সময় বিচারককে উদ্দেশ্য করে আসামি বলেন, তাকে জামিন দিচ্ছেন না এই বিচারক। এই বলে তিনি বিচারককে লক্ষ্য জুতা ছুড়ে মারেন। ঘটনার পরপরই কর্তব্যরত পুলিশ তাকে জাপটে ধরে নিজেদের হেফাজতে নেয়। এরপর বিচারক এজলাস থেকে নেমে আর বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেননি।
আদালতের তথ্যমতে, জাতির জনক ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণিবাড়িয়ার নাসিরনগর থানায় মনির খান মাইকেলের (৩২) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ উপ-পরিদর্শক তপু সাহা বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মো. মনির খান মাইকেল নামীয় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দুটি লাইভ করেন তিনি। যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে আশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মানহানিকর এবং মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন।
পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) তপু সাহা বাদী হয়ে ২০২১ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
এদিন আসামির পক্ষে জামিন আবেদন করেছিলেন তার নিয়োজিত আইনজীবী। তবে এ ঘটনার পর ওই আইনজীবী আদালতকে লিখিতভাবে জানান আসামি পক্ষে তিনি আর মামলা পরিচালনা করতে চান না।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে নগরের কোতায়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন পিপি মেজবাহ উদ্দিন।