‘সবকিছু বন্ধ করার হুমকি বাদ দিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি’ জানান এবি পার্টি।
সবকিছু বন্ধ করে দেয়ার হুমকি ধমকি বাদ দিয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’র সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু। আজ রাজধানীর বিজয় নগরস্থ ‘বিজয় ৭১’ চত্বরে ১ দফা দাবিতে কালো পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ থেকে এ দাবি জানান তিনি। দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার-এর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সিনি. সহকারী সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় সকাল ১১ টায় এই বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এবি পার্টি’র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে সকাল ১১ টা হতে কালো পতাকা নিয়ে দলীয় কর্মীরা ‘বিজয় ৭১’ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গত ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্রকামী সকল মানুষের উপর স্যাংশন দিয়ে রেখেছে। স্বাধীন মত প্রকাশ ও ভোট দানের অধিকার তো দুরের কথা সরকার এখন হুমকি দিচ্ছে তারা আমাদের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সবকিছু নাকি বন্ধ করে দেবে। নমরুদ যেমন নিজেকে সবকিছুর নিয়ন্ত্রক ও সর্বশক্তিমান ভেবে যাকে খুশী তাকে হ্ত্যা করে নিজের ক্ষমতার প্রমাণ দিতে চেয়েছিল, শেখ হাসিনাও নিজেকে একই রকম কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসক ভেবে নাগরিকদের সকল অধিকার বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। অতীতের সকল স্বৈরাচারদের মতই তিনি তার অনিবার্য পরিণতির দিকে হাঁটছেন উল্লেখ করে মন্জু বলেন, গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মূল বাঁধা একজন শেখ হাসিনা’ তার বিরুদ্ধে সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের পক্ষ থেকে স্যাংশন দেয়া এখন সময়ের দাবি।
সমাবেশে বিশেষ বক্তা ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, দিল্লীতে প্রটোকলের তোয়াক্কা না করে আগ বাড়িয়ে সেলফি তুলে, ওয়াশিংটনে বাইডেন দম্পতির সাথে ডিনার খেয়েও প্রধানমন্ত্রীর শেষ রক্ষা হয়নি। ভিসা নিষেধাজ্ঞা যেমন ঠেকানো যায়নি, তেমনি তথ্য উপদেষ্টার লুটের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা বন্ধ করা যায়নি। দরবেশ বাবাসহ ফ্যাসিবাদী শাসনের অনেক সহযোগীর বাড়িতে এখন শোকের মাতম চলছে। শেখ হাসিনার গোয়ার্তুমিতে শুধু দল হিসেবেই আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে না, পুরো দেশ ও জাতির সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে যা চলবে যুগ যুগ ধরে। উন্নয়নের নামে বেহিসাব লুটপাট, অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি নোট ছাপিয়েও সামাল দেয়া যাচ্ছে না। বাজারদরে আগুন, ডলারের মজুদ উদ্বিঘ্ন হবার মত হারে কমছে কিন্তু শাসকগোষ্ঠির কোন মাথাব্যথা নেই। যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য, তাতে দেশ জাতি গোল্লায় গেলেও হাসিনা গংদের কিছু যায় আসে না।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, সারাদেশ যেমন কয়েকদিনের বর্ষার পানিতে ভিজে চুপষে গিয়েছে বর্তমান সরকারের দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্নীতি লুটপাট নৈরাজ্য গুম খুন ও স্বজন প্রীতিতে দেশ ডুবে আছে। চারদিক থেকে এখন বাকশালী পঁচা গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের হাত থেকে জাতি মুক্তি চায়। নির্যাতিত নিষ্পেষিত জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এই লুটেরা সরকার পালাতে বাধ্য হবে বলে তিনি হুশিয়ারী জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক বিএম নাজমুল হক, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুবপার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, গাজীপুর জেলা আহবায়ক আমজাদ খান, মহানগর আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক গাজী নাসির, উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবির, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, নারী নেত্রী আমেনা বেগম, সুলতানা রাজিয়া, শাহিনুর আক্তার শীলা, জেসমিন আক্তার মুক্তা, যুবনেতা মাসুদ জমাদ্দার রানা, উত্তরের সিনিয়র সদস্য সেলিম খান, আব্দুর রব জামিল সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।