বগুড়ায় বহুল আলোচিত অটোরিকশা চালক জিহাদ হত্যা মামলার জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছন র্যাব-১২ সিপিএসসি বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যরা। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৬টার দিকে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব সদস্যরা। অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে র্যাব।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামি বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার, নন্দগ্রাম মধ্যপাড়ার এলাকার, ইউনুস আলী ছেলে। যুবকের নাম মো. রনি । উল্লেখ্য গত, বুধবার (৪ অক্টোবর) অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় জিহাদ বাবু। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর তীর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। জিহাদ বগুড়া জেলা সদরের মালগ্রাম এলাকার আতাউর প্রামাণিকের ছেলে।
শুক্রবার বিকেলে এক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-সিপিএসসি বগুড়া কোম্পানি কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার, মীর মনির হোসেন জানান, গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় জিহাদ বাবু। রাত হয়ে গেলেও বাসায় না ফেরায় পরদিন সকালে সদর থানায় হারানো জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন নিহতের বাবা আতাউর প্রামাণিক। বিকেলে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারেন যমুনার তীরে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর৷ পরে সারিয়াকান্দি থানায় গিয়ে তিনি লাশ শনাক্ত করেন। লাশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের ৯টি চিহ্ন ছিল। এ ঘটনার পরপরই মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। পরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রনিকে গ্রেফতার করেন বগুড়া র্যাব সদস্যরা। গ্রেফতারকৃত আসামের জবান বন্দির বরাত দিয়ে র্যাব জানান, গত বুধবার দুপুর ২টার দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে সারিয়াকান্দি কালিতলা ঘাটে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসামি রনির পূর্বপরিচিত দুইজন ভিকটিম জিহাদের অটোরিকশা ভাড়া নেন। পথিমধ্যে রনি, তার স্ত্রী ও তাদের পরিচিত আরও একজন একই উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মতে একই অটোরিকশায় ওঠেন। বিভিন্ন জায়গায় বেড়ানোর পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তারা সারিয়াকান্দি থানার কালিতলা ঘাটে পৌঁছেন। সেখানে কিছু সময় অতিবাহিত করার পরে অটোরিকশাটি গ্যারেজে রেখে রনি এবং তার স্ত্রীকে রেখে অপর দুইজন অটোচালক জিহাদকে বিভিন্ন কৌশলে তাদের সাথে নিয়ে নৌকাযোগে চরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর প্রায় ঘন্টাখানেক পরে জিহাদকে ছাড়াই কালিতলা ঘাটে তারা ফিরে আসেন ওই দুইজন। গ্যারেজে রাখা অটোরিকশাটি গ্যারেজ থেকে নিয়ে আসতে রনির উপর তার সঙ্গীরা চাপ সৃষ্টি করেন। রনি গ্যারেজ থেকে অটোরিকশাটি ছাড়িয়ে নিয়ে তার স্ত্রী এবং বাকি দুজনসহ সদরে চলে আসেন এবং অটোরিকশাটি তার কাছে রাখেন। গোয়েন্দা সূত্রে র্যাব জানতে পারেন যে, আজ সকালে অটোরিকশাটি শহরের চেলোপাড়া এলাকায় ফেলে রেখে তিনি আত্মগোপনে চলে যেতে ঢাকার দিকে রওনা দেওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, তাকে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গ্রেফতারকৃত রনিকে সাথে নিয়ে সকাল ৮টায় সদরের চেলোপাড়া এলাকা থেকে অটোরিকশাটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করছেন র্যাব। র্যাব-১২ কোম্পানি কমান্ডার আরো জানান গ্রেফতারকৃত রনি ও উদ্ধারকৃত অটোরিকশাটি সারিয়াকান্দি থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়াধীন আছে।