রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

৬ ঘণ্টার নাটকীয়তা, দ. কোরিয়ায় ইউনকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ তদন্তকারীরা।

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৫

৬ ঘণ্টার নাটকীয়তা, দ. কোরিয়ায় ইউনকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ তদন্তকারীরা।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হয়েছেন দেশটির তদন্তকারীরা। টানা ৬ ঘণ্টার উত্তেজনাপূর্ণ নাটকীয়তা শেষে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডস ও সৈন্যদের বাধার মুখে অভিশংসিত এই প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারে তাদের অভিযান ব্যর্থ হয়।

এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর ইউনকে গ্রেপ্তার করতে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন কমপ্লেক্সে যান তদন্তকারীরা।

অভিশংসিত এই প্রেসিডেন্ট গত ডিসেম্বর মাসের শুরুতে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়েছিলেন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষ শুক্রবার সালে তার কম্পাউন্ডে যান। কিন্তু দেশটির প্রেসিডেন্টের গার্ড এবং সামরিক বাহিনীর সৈন্যরা ইউনের কম্পাউন্ডের অভ্যন্তরে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে গ্রেপ্তার করতে কর্তৃপক্ষকে বাধা দেয় এবং সেখানে উভয়পক্ষের ছয় ঘণ্টার উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থানের মধ্যে অভিশংসিত প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

মূলত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস (পিএসএস) এর আগে ইউনের অফিস এবং অফিসিয়াল বাসভবনে অনুসন্ধান পরোয়ানা দিয়ে তদন্তকারীদের প্রবেশেও বাধা দিয়েছিল।

এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুমোদন করে বলে দেশটির তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল। গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার সিদ্ধান্তের কারণে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তাকে অভিশংসন এবং ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমান কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটিই ছিল প্রথম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার কোনও ঘটনা।

রয়টার্স বলছে, উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্বে থাকা দ্য করাপশন ইনভেস্টিগেশন অফিস ফর দ্য হাই-র‌্যাঙ্কিং অফিশিয়ালস (সিআইও) কর্মকর্তারা ইউনকে গ্রেপ্তারে তদন্তকারীদের একটি যৌথ দলের নেতৃত্ব দেন। এই দলের মধ্যে পুলিশ এবং প্রসিকিউটররাও রয়েছেন।

সিআইও এক বিবৃতিতে বলেছে, “চলমান অচলাবস্থার কারণে অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে।”

মূলত এদিন ইউনকে গ্রেপ্তারে বাধা দেয় প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনী পিএসএস। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরে বাধা হয়ে দাঁড়ান। অন্যদিকে ইউনের গ্রেপ্তার ঠেকাতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেন তার শত শত সমর্থক।

এমন অবস্থায় ইউনকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা ঘিরে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে এই অচলাবস্থা চলে। পরে তদন্তকারীরা ইউনকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা থেকে সরে আসেন। একপর্যায়ে প্রেসিডেন্টের বাসভবন কমপ্লেক্স ত্যাগ করেন তারা।

তদন্তকারীরা চলে গেলে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেওয়া ইউনের সমর্থকদের উল্লাস করতেও দেখা যায়।

এর আগে দেশটির বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ সিআইওকে উদ্ধৃত করে বলেছিল, বর্তমান এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং এটি প্রয়োগ করা হলে ইউনকে সিউল ডিটেনশন সেন্টারে আটক রাখা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ ডিসেম্বর উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে মুক্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্র রক্ষা, জনগণের স্বাধীনতা ও সুখ লুণ্ঠনকারী ঘৃণ্য উত্তর কোরিয়াপন্থী রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোকে নির্মূল এবং উদার সাংবিধানিক সুরক্ষার ঘোষণা দিয়ে হঠাৎ করে দেশজুড়ে সামরিক আইন জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।

যদিও বিরোধীদের তীব্র আপত্তি ও সংসদে ভোটাভুটির পর মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে সেই সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত চলমান আছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ইউন অভিশংসিত হওয়ায় তার স্থানে এখন একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। অবশ্য সংসদে অভিশংসিত হলেও জটিল আইনি প্রক্রিয়ার কারণে প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন ইউন। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না তার।

এছাড়া রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে তার দায়িত্ব ও ক্ষমতা থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তবে সাংবিধানিক আদালত তার ভাগ্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকবেন তিনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102