শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদের জেরে কংগ্রেস ছাড়ছেন টেইলর গ্রিন

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত দেশটির কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিন আগামী জানুয়ারিতেই প্রতিনিধি পরিষদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিবাদের কয়েকদিন পরই এই ঘোষণা দিলেন গ্রিন।

ট্রাম্পের ‘মাগা’ (মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন) আন্দোলনের কট্টর সমর্থক গ্রিন শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় জানান, আগামী ৫ জানুয়ারিতেই তিনি কংগ্রেস ছাড়ছেন। তিনি বলেন, ‘সামনে নতুন কিছুর জন্য মুখিয়ে আছি।’

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ‘ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব’ প্রচার ও ট্রাম্পকে অন্ধ সমর্থন দিয়েই মূলধারার রাজনীতিতে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন গ্রিন। তবে, শিশু যৌন নিপীড়ক প্রয়াত জেফরি এপস্টেইন সংক্রান্ত নথি প্রকাশ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিবাদ প্রকাশ্যে চলে আসে।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া ভিডিও বার্তায় গ্রিন তার অর্জনগুলোর তালিকা দেন এবং ট্রাম্পের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মসম্মান ও মর্যাদা ব্যাপক, পরিবারকে অনেক বেশি ভালোবাসি, এবং চাই না আমার চমৎকার কংগ্রেস আসন আমার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টের বেদনাদায়ক ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রাইমারি (দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের ভোট) দেখুক, তাও সেই প্রেসিডেন্ট যার জন্য আমরা সবাই লড়েছি।’

প্রতিনিধি পরিষদ থেকে তার পদত্যাগের ঘোষণার আগেই মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে এই গুঞ্জন প্রবল ছিল যে গ্রিন সম্ভবত জর্জিয়া থেকে সিনেটে বা গভর্নর পদে দাঁড়াতে চাইছেন।

নিজেদের মধ্যে বিবাদ প্রকাশ্যে আনার সময় ট্রাম্পও তার ট্রুথ সোশালে গ্রিনের এসব আকাঙ্ক্ষার কথা সামনে আনেন। বলেন, দুর্বল জনসমর্থনের কারণে রিপাবলিকান এ কংগ্রেস সদস্যকে ওই দুই পদের কোনোটিতেই দাঁড়ানোর চিন্তা করতে নিষেধ করেছিলেন তিনি।

সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রাম্প ও গ্রিন ছিলেন দীর্ঘদিনের মিত্র; জর্জিয়ার এ প্রতিনিধি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডাকে সামনে এগিয়ে নিতে ব্যাপক পরিশ্রমও করেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে এপস্টেইন সংক্রান্ত যত নথি আছে তার সব প্রকাশের দাবি জানানো রিপাবলিকানদের দলে যোগ দেওয়ার পর দুজনের সম্পর্কে ফাটল ধরে।

ট্রাম্প শুরুতে এপস্টেইন ফাইলস প্রকাশের বিলের বিরুদ্ধে ছিলেন, কিন্তু গ্রিন এবং আরও অনেক রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য বিলটির পক্ষে ভোট দিতে যাচ্ছে বুঝতে পেরে তিনি পরে সুর পাল্টান। কেবল এপস্টেইন সংশ্লিষ্ট নথিই নয়, আরও কিছু বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ও অনেক রিপাবলিকানের সঙ্গে তার বিবাদ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছিল।

গত কয়েক মাসে তিনি অনেক টক-শোতে গিয়ে ভোটারদের দৈনন্দিন খরচ কমাতে প্রেসিডেন্ট তেমন কিছু করছেন না বলে বারবার সমালোচনা করছিলেন। তিনি ট্রাম্পের শুল্ক নীতিরও তীব্র বিরোধী হিসেবে আবির্ভূত হন।

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও ইসরায়েল ও অন্য কিছু দেশকে ‘বেশি টানছেন’ এমন অভিযোগও তুলছিলেন তিনি। তবে তার মূল ক্ষোভই ছিল প্রেসিডেন্ট ও তার প্রশাসন কেন এপস্টেইন ফাইলস প্রকাশ করছে না তা নিয়ে। নথিগুলো প্রকাশে কংগ্রেসের কিছু করার দরকারই ছিল না, ট্রাম্প চাইলে নিজেই সমস্ত নথি প্রকাশের অনুমতি দিতে পারতেন।

ট্রাম্প পরে গ্রিনের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক পোস্টও দিয়েছেন, যেগুলোতে তিনি জর্জিয়ার এ রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যকে ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘পাগলাটে’ এসব তকমাও দিয়েছেন।

তবে গ্রিনের চেষ্টা বৃথা যায়নি, তার মতো অনেক রিপাবলিকানের মিলিত সহায়তায় মার্কিন কংগ্রেস বিচার মন্ত্রণালয়কে এপস্টেইন সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশে বাধ্য করতে পেরেছে। মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল পাস হওয়ার পরদিনই ট্রাম্প তাতে স্বাক্ষর করে একে আইনে পরিণত করেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102