মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনুমোদিত ২৮-দফা শান্তি পরিকল্পনার খসড়ায় ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে অতিরিক্ত অঞ্চল সমর্পণ করতে হবে, সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচেষ্টা ত্যাগ করতে হবে। মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাক্সিওস নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) মার্কিন সেনাসচিব ড্যানিয়েল ড্রিসকল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছে লিখিত পরিকল্পনাটি পৌঁছে দেন।জেলেনস্কি পরে বলেন, তিনি ট্রাম্পের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তিনি এটিকে ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব নয় বরং একটি মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি’ বলে বর্ণনা করেছেন।অ্যাক্সিওস একজন মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পরিবর্তন সাপেক্ষে পরিকল্পনাটি একটি ‘জীবন্ত দলিল’। এটি একটি ন্যায্য কাঠামো – ওয়াশিংটন আশা করে, ইউক্রেন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, খসড়াটি তারা পেয়েছে এবং ইউক্রেনীয় ও মার্কিন কর্মকর্তার কাছ থেকে যাচাই করেছে। এতে ইউক্রেনকে সশস্ত্র বাহিনীর সংখ্যা ৬ লাখে সীমাবদ্ধ রাখতে এবং ন্যাটো সদস্যপদ ত্যাগ করার জন্য সংবিধান সংশোধন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
একইভাবে ন্যাটো আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনকে কখনো স্বীকার না করার বিষয়ে সম্মত হবে এবং ইউক্রেনের মাটিতে সৈন্য মোতায়েনের বিষয়ে জোটটির ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।এই পরিকল্পনায় ক্রিমিয়া, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ককে কার্যত রাশিয়ান অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তবে যোগাযোগ রেখা বরাবর খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া ইউক্রেনেরই থাকবে।ইউক্রেনীয় সৈন্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দোনেৎস্কের কিছু অংশ থেকেও প্রত্যাহার করবে – রাশিয়ার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি নিরপেক্ষ অসামরিকীকরণকৃত বাফার জোনে পরিণত হবে।
নথিতে বলা হয়েছে, বিনিময়ে ভবিষ্যতে রাশিয়ার যে কোনো হামলার ‘সিদ্ধান্তমূলক সমন্বিত সামরিক প্রতিক্রিয়া’ তৈরি হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশগ্রহণ করবে কি না, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।প্রস্তাবটিতে অর্থনৈতিক বিষয়াদিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জব্দ করা ১০০ বিলিয়ন ডলারের রাশিয়ান সম্পদ ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহৃত হবে এবং ইউরোপ আরও ১০০ বিলিয়ন ডলার দেবে।রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া হবে এবং মস্কো ‘জি৮’-এ তার আসন ফিরে পাবে। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া জ্বালানি, খনি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
চুক্তির ১০০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনকে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। সংঘাতের সকল পক্ষ পূর্ণ সাধারণ ক্ষমা পাবে।গাজার জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতিধ্বনির মতো এই চুক্তিটিও ‘আইনত বাধ্যতামূলক’ হবে এবং ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ এটি তত্ত্বাবধান করবে। যে কোনো লঙ্ঘনের ফলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।