শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ, প্রায় ৬০০ স্কুল বন্ধ ঘোষণা

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

বিতর্কিত সীমান্তে কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী এলাকার স্কুলগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেয়। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

ব্যাংককভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য থাই এনকোয়ারার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুরিন, সিসাকেট এবং বুরি রাম প্রদেশে মোট ৫৮২টি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে, ঝুঁকির বাইরে থাকা কিছু স্কুলকেও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষামন্ত্রী নারুমন পিনিওসিনওয়াত বলেন, ‘আমি সীমান্তবর্তী এলাকার স্কুলগুলোকে একটি পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য বাঙ্কার বা নিরাপদ এলাকা তৈরি রাখার পাশাপাশি নিরাপদ এলাকায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

এর আগে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিতর্কিত সীমান্তে সামরিক সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় থাই কর্তৃপক্ষ। নিহতদের অধিকাংশই তিনটি থাই প্রদেশের বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। সংঘর্ষে আরও অনেকে আহত হয়েছেন। তবে কম্বোডিয়া এখনো নিজেদের কোনো ক্ষয়ক্ষতির বিষয় নিশ্চিত করেনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ভোরে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। এর পরই সংঘর্ষ দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে। এ ঘটনায় দুই দেশই একে অপরকে দায়ী করছে।

থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়া আগে রকেট হামলা চালিয়েছে, যার জবাবে থাই বিমান বাহিনী কম্বোডিয়ার সামরিকস্থলে বিমান হামলা চালায়। এদিকে থাইল্যান্ড ইতোমধ্যে কম্বোডিয়ার সঙ্গে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।

এরইমধ্যে উভয় দেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থানরত তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। থাইল্যান্ড প্রায় ৪০ হাজার বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।

থাইল্যান্ডের বুড়িরাম প্রদেশের বান দান জেলার এক বাসিন্দা সুতিয়ান পিউচান বিবিসিকে বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। আমরা এখনই এলাকা ছেড়ে দিচ্ছি।’

থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সুরিন, উবন রাচাথানি এবং শ্রীসাকেত প্রদেশে সংঘর্ষে ১১ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে এক ৮ বছর বয়সি শিশু এবং এক ১৫ বছর বয়সি কিশোরও রয়েছে। এ ছাড়াও একজন সামরিক সদস্য নিহত হয়েছেন।

গত দুই মাসে উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। থাইল্যান্ড থেকে ফল, সবজি, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা আমদানিও বন্ধ করে দেয় কম্বোডিয়া। এছাড়া দুই দেশই সম্প্রতি সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে।

থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেছেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বিরোধ ‘সংবেদনশীল’ এবং তা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় দায়িত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত বলেছেন, তার দেশ শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধের নিষ্পত্তি করতে চায়, তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সশস্ত্র আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিক্রিয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।’

যদিও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ কিছুটা কমেছে। তবুও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুর্বলতা ও আস্থাহীনতা এ সংকট থেকে সরে আসার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102