গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মান্নান হাওলাদার স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন, যেখানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা উপস্থিত ছিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা বিষয়টি টের পেলে তিনি কৌশলে সন্ত্রাসীদের সরিয়ে দেন। কিন্তু এর মধ্যেই গভীর ষড়যন্ত্রের বীজ বোনা হয়, যার ফলাফল দেখা যায় পরবর্তী হামলাগুলোতে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভার পর, ইউএনও অফিসের সামনে দেশীয় অস্ত্রসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাগেরহাট জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ হাসান নোমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি আবু হাসান শেখ এবং মোংলা উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ শেখ এ হামলার শিকার হন।
উপজেলা প্রশাসনের সিসিটিভি ফুটেজেই প্রমাণ রয়েছে—মান্নান হাওলাদার কীভাবে সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করেছে, কোন কক্ষে তাদের নিয়ে পরিকল্পনা করেছে, এবং কীভাবে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।
উপজেলা প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও আইনের শাসন ধ্বংসের ষড়যন্ত্র
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সরকারি প্রশাসনের ওপর বারবার আঘাত হেনেছেন মান্নান হাওলাদার। অতীতেও তিনি সাবেক ইউএনও আফিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করে জনগণের কাছে প্রশাসনকে হেয় করেছেন। এবারও তিনি একই কৌশল গ্রহণ করেছেন। ১৮ মার্চের নৃশংস হামলার মাধ্যমে তিনি বর্তমান ইউএনও-কে দুর্বল ও অযোগ্য প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন, যার ফলে পুরো উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহভাবে অবনতি ঘটেছে।
একের পর এক সহিংসতার মাধ্যমে মান্নান হাওলাদার পুরো মোংলা উপজেলাকে এক অরাজক অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
কালভার্ট সংলগ্ন রাস্তা: জাতীয় নাগরিক কমিটির বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি আবু হাসান শেখ ও তার ভাই আব্দুল্লাহসহ কয়েকজনের ওপর হামলা।
ফুলপুকুর-রামপাল সড়ক: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সদস্য এম এ ফয়সাল, জাতীয় নাগরিক কমিটির মোংলা উপজেলা প্রতিনিধি গোলাম আজম, জসিম সরদার ও জুবায়ের হোসেনকে সন্ত্রাসীরা জিম্মি করে।
২০ মার্চ: ইফতার পরবর্তী সময়ে চায়ের দোকানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের লক্ষ্য করে হুমকি প্রদান।
মান্নান হাওলাদারের সন্ত্রাসী বাহিনী: হুমকি, চাঁদাবাজি ও হামলার ছড়াছড়ি
মান্নান হাওলাদারের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী প্রকাশ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। ২০ মার্চ একদল সন্ত্রাসী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বলেন—
“সব শালাকে ঝুলিয়ে দিয়ে এমন পেটান পেটাবো যে বাপের নাম ভুলে যাবে”
তারা চেয়ারম্যানের মোড়ে দাঁড়ালে “ঠ্যাং ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো” বলেও হুমকি দেয়।
এই বাহিনীর অন্যতম সদস্য জাহিদের বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল এবং বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে এসব ঘটনা উপেক্ষা করায় মান্নান হাওলাদার আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীরা সরাসরি জীবনের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। মোংলা উপজেলায় সন্ত্রাসের এই দৌরাত্ম্য রুখতে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায়, পুরো এলাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে, যা প্রশাসনের জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
প্রশ্ন রয়ে যায়—কতদিন মান্নান হাওলাদারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশাসন সহ্য করবে? আর কত নিরীহ মানুষ তার আক্রমণের শিকার হবে?