কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গুলিবিদ্ধের অভিযোগ।
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আ.লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের জের ধরে কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের গুলিতে বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গুলিবিদ্ধ শাহজান সাজু (৩৭) বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য এবং কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ তার ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জুর সক্রিয় অনুসারী। সে বসুরহাট পৌরসভা ৯নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা কাদেরের বাড়ির আহছান উল্যার ছেলে ।
রোববার ( ৮ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের মওদুদ স্কুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু অভিযোগ করেন, কাদের মির্জার নির্দেশে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার থেকে ফেসবুক লাইভে এসে আমাকে ও আমার খালাতো ভাই রাহাতসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যার হুমকি দেয় কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেল। হুমিকর দুইদিন পর ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের ওপর এবং পাঁচ দিন পর কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে কাদের মির্জার ১০-১৫জন অনুসারী স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাজুর ওপর হামলা চালায়। এ সময় কেচ্ছা কেচ্ছা রাসেল, ডাকাত পিচ্ছি মাসুদ, জিসান সাজুকে লক্ষ করে গুলি ছুঁড়লে সে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৬ রাউন্ড গুলিবিদ্ধ হয়।
মঞ্জু আরও অভিযোগ করেন, অস্ত্রধারী কেচ্ছা রাসেল বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারী ক্যাডারদের মধ্যে অন্যতম। কাদের মির্জা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও কেচ্ছা রাসেলসহ তার অনুসারী একদল অস্ত্রধারী বসুরহাট পৌরসভার তৃতীয় তলায় বসবাস করে আসছে। চলতি বছরের মে মাসে বসুরহাট পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের করালিয়াতে অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া ও গুলি করছেন এমন একটি ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাৎক্ষণিক ভিডিওটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাতে পেয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত অদৃশ্য কারণে পুলিশ অস্ত্রধারী কেচ্ছা রাসেল ও পিচ্ছি মাসুদকে গ্রেফতার করেনি। এ ছাড়াও এই অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে ২০-২২টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরের দিকে সাজু মওদুদ স্কুলের পাশে এশিয়ান ফার্নিচার নামে একটি দোকানে বসে ছিল। এসময় কাদের মির্জার অনুসারী শহীদুল্লাহ রাসেল ওরফে কেচ্ছা রাসেল,জিসান,পিচ্চি মাসুদ ও মানিক সহ ৭-৮ জন দুইটি সিএনজি যোগে আসস্মিক মওদুদ স্কুল এলাকায় এসে সাজুর ওপর লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মাথায় কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে ও বাম পা ও দুই হাত ভেঙ্গে দেয় এবং কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে সে গুলিবিদ্ধ হয়।
এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ঘোষিত উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুলের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাজুর শরীরে স্প্রিন্টারের আঘাত ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, সাজুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, বসুরহাট পৌরসভার মওদুদ স্কুল এলাকায় তার বাড়ির সামনে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ সাজু গুলিবিদ্ধ হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় তার অনুসারীরা।