রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পেতে করা আপিলের চতুর্থ দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) বেলা ১১টা ৮ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।
জামায়াতের পক্ষে শক্তিশালী আইনি দল
আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। তাকে সহযোগিতা করছেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
শুনানিকালে আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতা।
পেছনের প্রেক্ষাপট
২০০৯ সালে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে। পরে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এর বিরুদ্ধে জামায়াত আপিল করলে ২০২3 সালের নভেম্বরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুনানিতে দলটির মূল আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় “ডিসমিস ফর ডিফল্ট” বলে আপিল খারিজ করে দেয়। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে এবং দলটির নিবন্ধন বাতিলই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়।
তবে ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর, আপিল বিভাগের আরেক বেঞ্চ জামায়াতের খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার অনুমতি দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ১২ মার্চ থেকে পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু হয়।
নিষেধাজ্ঞা ও পরবর্তী পরিবর্তন
এদিকে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু ২৮ আগস্ট সরকার সেই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে।
পরবর্তী ধাপ
চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করবেন বলে জানা গেছে। বিষয়টির উপর নজর রাখছে রাজনৈতিক ও আইনি মহল।