বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি দুইদিন বিরতির পর ফের জেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। রোববার সকালে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে তাবু টানিয়ে চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান নিয়েছেন তারা। ঘেরাও কর্মসূচি চলবে দুপুর একটা পর্যন্ত।
দুর্গাপূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি না থাকলেও নির্বাচন অফিস ঘেরাও এবং অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানান নেতাকর্মীরা।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির সদস্য সচিব ও জামায়েতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মাদ ইউনুস বলেন, দুর্গাপূজা ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে আমরা হরতালের কর্মসূচি আপাতত বাতিল করেছি। তবে চারটি আসন ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বৃহস্পতিবার একই দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো জেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করেছিল সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। ওই দিন সকাল থেকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয়ের সামনে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান নেন তারা। সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নির্বাচন অফিসের সামনে যান সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির কো-কনভেনর ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘আমরা আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলাম। আদালত প্রাথমিকভাবে ১০ দিনের রুল জারি করেছে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে অসহযোগ আন্দোলন করার ঘোষণা দেন এই নেতা।’
বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি শেষে পরদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আন্দোলন দুই দিনের জন্য স্থগিত ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। ওই দিন বিকেলে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক জরুরি সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন কমিটির কো-কনভেনর এম এ সালাম। তিনি বলেন, সরকারি ছুটির কারণে শুক্রবার ও শনিবার আমরা নির্বাচন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করেছি। কারণ, এই সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছুটিতে থাকবেন। রোববার থেকে আবারও একইভাবে ঘেরাও কর্মসূচি চলবে। এছাড়া আগামী সপ্তাহে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করার কথা জানান তিনি।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা বলছেন, চারটি আসন বাগেরহাটবাসীর অধিকার। চারটি আসন ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে অসহযোগ আন্দোলন করার ঘোষণা দেন নেতারা।
অন্যদিকে একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রুলে উচ্চ আদালত যাতে চারটি আসন ফিরিয়ে দেন সেজন্যও কাজ করা হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মাদ জাকির হোসেন।