মোঃ শফিকুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত বাউফলের চার ব্যক্তি লাশ আজ ০৯ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে নওমালা গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছানোর পর শোকের মাতম চলছে। দুপুর দেড়টার দিকে আবদুর রশিদ খান ডিগ্রী কলেজ মাঠে লাশবাহী চারটি এ্যাম্বুলেন্স এসে থামলে মুহূর্তের মধ্যে কয়েক হাজার শোকাহত মানুষ জড়ো হন। এসময় পরিবেশ ভাড়ি হয়ে উঠে। পৌনে ২টার দিকে জানাজা শেষে চারটি লাশ যার যার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল শহর বাইপাসের রাবনা ঘারিন্দা এলাকায় ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজনের এবং আহত দুজনের মধ্যে একজনের বাড়ি বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের নওমালা গ্রামে।
নিহতরা হলেন নওমালা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ নজরুল মোল্লা (২৮), আবদুল সোবাহান (৩০), রিয়াজ আকন (২৮), বাবুল মৃধা (২৬)। আহত নিজাম উদ্দিনকে (৫৫) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। এরা সবাই ঢাকার শ্রমিক ছিলেন। তাঁরা প্রেসের মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন।
সরেজমিন দেখা গেছে নিহত রিয়াজের বাবা মোকলেচ আকন বুক চাপড়ে কাঁদছেন। মোকলেচ আকন বলেন,সাত সদস্যের সংসারের আয়ের উৎস ছিলেন রিয়াজ। ওর আট বছরের একটি কন্যা সন্তান ও পাঁচ বছরের একটি পুত্র সন্তান আছে। এখন কে ধরবে সংসারের হাল? এই বলে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন।
নিহত সোবাহানের বাবা-মা কেউ নাই। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী রিপা আক্তার (২৫), চার বছরের আবু সাইদ ও সাত মাস বয়সের আজনাঈন নামে দুটি পুত্র সন্তান ।
বাড়ির লোকদের জড়িয়ে ধরে আহাজারি করছিলেন রিপা আক্তার। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছিল না তাঁকে। তিনি বলেন,‘এতিম সন্তান দুটির কি হবে? আমি কেমনে বাঁচমু?’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাডঃ কামাল হোসেন বলেন,‘বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক । যে চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন তাঁরা সবাই দরিদ্র পরিবারের সন্তান । তাঁদের আয়ের ওপর নির্ভর করেই তাঁদের পরিবার-পরিজনের সংসার চলত। তাঁদের অকাল মৃত্যুতে তাঁদের স্বজনদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’