রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন

বিভিন্ন অনিয়ম ও ঘুষ দুর্নীতি বানিজ্য শীর্ষে তারাকান্দার সাব-রেজিস্ট্রার  রহমত উল্লাহ লতিফ

প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম, তারাকান্দা উপজেলা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
ময়মনসিংহের তারাকান্দা সাব-রেজিস্ট্রার  রহমত উল্লাহ লতিফ’র  বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও ঘুষ- দুর্নীতির অভিযোগের হিড়িক  ওঠেছে।

জানা গেছে, সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ রহমত উল্লাহ লতিফ ময়মনসিংহের তারাকান্দা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি গত ৯ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ই তারিখে তারাকান্দায় যোগদান করেন।

”৩৫তম বিসিএস”র ননক্যাডার অফিসার হিসেবে ২০১৭ সনে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের শাসন আমলে যোগদান করেন তিনি।

এত ব্যাপক ভাবে লুটপাট স্বাধীন বাংলায় আর কখনও হয়নি। ব্যাপক ভাবে লুটপাটের এবং চাঁদাবাজির কারণে বাংলাদেশের ৮০% জনগণ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে এখনও।

রহমত উল্লাহ লতিফের  জন্মস্থান রংপুর হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার দাপটে আওয়ামীলীগ আমলে তিনি ব্যাপক ঘুষ বানিজ্য করেছেন অদৃশ্য শক্তির প্রভাব খাটিয়ে। সাব-রেজিস্টার ভূমি অফিস মানে দুর্নীতির আখড়া ও হাটিাজার। সেই সুবাধে অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন।  বিষয়টি সকলে জানলেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবের কারণে দাপটের সঙ্গে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় মহলের লোকজন জানলেও ধরাছোঁয়ার বাহিরে তিনি তার দুর্নীতির হাটবাজার জমিয়ে তুলেছেন এক অজানা শক্তির প্রভাব খাঁটিয়ে।

রহমত উল্লাহ লতিফ প্রথমে হাতীবান্ধা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদান করেন। পরবর্তীতে কলমাকান্দা, তারপর গফরগাঁও এরপর কান্দিপাড়ায় যোগদান করেন।

২ বছর পর পর সাব-রেজিস্ট্রারগনের বদলী হওয়ার নিয়ম থাকলেও, নিয়ম ভেঙ্গে চার মাস যেতে না যেতেই অবৈধভাবে গত ৯/০২/২৫ তারিখে তারাকান্দায় যোগদান করেন তিনি।

তারাকান্দায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন প্রকার ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দলিল প্রতি তাকে স্বর্বনিম্ন ৩০০০ টাকা, জমির মূল্যের উপর প্রতি লাখে ৫০০ টাকা, অন্যান্য খরচ সহ প্রতি লাখে তাকে ৫০০০ টাকা তাকে ঘুষ দিতে হয়। এছাড়া ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ভূমি বিক্রি করলে প্রতি দলিলে ঘুষ দিতে হয় ১০,০০০ টাকা, দাতার নামের গড়মিল থাকলে দলিল প্রতি ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয় তাকে।

ঘুষ দিলে অনিয়ম কাজটা নিয়ম হয়ে যায় তার কাছে। টাকা দিলে খাজনা ছাড়াও দলিল রেজিষ্ট্রেশন করেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  ভোক্তাভোগীর মাধ্যমে জানা যায়,
দাদা-নানার নামে বি.আর.এস. থাকলে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ভূমি নাতি-নাতনি বিক্রয় করিলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় তাকে।

জাতীয় পরিচয় পত্রে “আবুল কাশেম” এবং দলিলে আবুল এর সংক্ষিপ্ত নাম “আঃ কাসেম” এতটুকু সমস্যার জন্য প্রত্যয়ন দিতে হয় এবং সাথে ১০ হাজার টাকা উৎকুচ না দলিল রেজিষ্ট্রেশন করেন না তিনি।

জাতীয় পরিচয় পত্রে “নাজিম উদ্দিন” এবং দলিলে “নাজিম আলী’ এতটুকু সমস্যার জন্য প্রত্যয়ন
দিতে হয় এবং সাথে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় তাকে।
জাতীয় পরিচয় পত্রে “হালিমা খাতুন” এবং দলিলে “হালিমা বেগম” এতটুকু সমস্যার জন্য প্রত্যয়ন দিতে হয় এবং সাথে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় তাকে।

ভাই-বোনদের মধ্যে বন্টনপত্র দলিল রেজিষ্ট্রী করার জন্য ৫০হাজার  থেকে এক লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয় তাকে।
নামের সামান্য ব্যবধান যেমন আক্তার ও খাতুন এর
জন্য  এফিডেভিট  দিতে হয় এবং তারই সাথে  ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় তাকে ।

অত্র অফিসের অফিসসহকারীকে  নিয়ে  সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দলিল লেখকদের জিম্মি  করে অর্থ আত্মসাতের হিরিক সৃষ্টি করেছেন তিনি।

ঘুষের  অর্থ দিয়ে আওয়ামীলীগের দূসরদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন এবং দলীয় কর্মকান্ডে ঘুষের অর্থ  ব্যয় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এসব ঘুষের বিষয়টা দলিল লেখকদের জিম্মি করে অফিস সহকারী ফারহানা রেজিন ও সাব-রেজিস্ট্রার যৌথভাবে ম্যানেজ করে থাকেন।

ঘুষ না দিলে অফিস সহকারী ফারহানা রেজিন দলিল আটকে রেখে পক্ষগণকে হয়রানি করে থাকেন।  আর সেই ঘুষ দুর্নীতিতে অন্যতম সহযোগি অফিস সহকারী ফারহানা রেজিনকে নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার রহমত উল্লাহ লতিফ তারাকান্দা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদানের পর থেকে তারাকান্দা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসকে ঘুষের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত করে তুলেছেন।

ঘুষের টাকা না দিলে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে জনগণকে সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়। বিভিন্ন দলিল লেখককের মাধ্যমে অফিসে আগত জমির ক্রেতা-বিক্রেতাকে চাপ প্রয়োগ করে অতিরিক্ত ঘুষ আদায় করে থাকেন তিনি। মোটকথা, ঘুষের টাকা ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার কোন দলিল রেজিষ্ট্রেশন করেন না। এছাড়া  ঘোষণাপত্র, অছিয়তনামা, পাওয়ার অব এটর্নি, অংশিদ্বারিত্ব ও চুক্তিপত্রের মতো দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি’ এর চেয়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বেশি না দিলে দলিল রেজিষ্ট্রেশন করেন না তিনি।
তারাকান্দার প্রায় সকল ”সরকার বা দলিল লেখক” এর সাথে তার অপব্যবহার প্রশ্ন তুলেন বার বার। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অভিশাপের সীমা নেতিবাচক।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপটে আওয়ামী লীগের দোষর নামে খ্যাত সাব-রেজিস্ট্রার রহমত উল্লাহ লতিফ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটিকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

দূর্ণীতিবাজ সাব-রেজিস্ট্রার রহমত উল্লাহ লতিফ ও তার স্ত্রী ধোবাউড়া সাব-রেজিস্টার এর সমস্ত সম্পদ জব্দ করে আওয়ামী লীগের দোসর নামে ক্ষ্যাত দুর্ণীতিবাজ এই অফিসারকে চাকরিচুৎ সহ প্রয়োজনীয় শাস্তি চায় সচেতন মহল। এই দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর সাব-রেজিস্টারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরের  উর্ধতন  কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত  অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীগণ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102