হিজরি নববর্ষের শুরুতেই পরিবর্তন করা হবে পবিত্র কাবার গিলাফ। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে কাবার গিলাফ হস্তান্তর করা হয়েছে। এবার পবিত্র কাবার গিলাফ পরিবর্তন হবে বুধবার (২৫ জুন ২০২৫ ও ১ মহররম ১৪৪৭ হিজরি) রাতে।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হিজরি নববর্ষের প্রথম দিন এশার নামাজের পর কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হবে। এর আগে একটি সুসজ্জিত বিশেষ ট্রাকে করে গিলাফ কাবা প্রাঙ্গণে আনা হবে। গিলাফ পরিবর্তনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কাবা ঘিরে রাখেন।
কাবার গিলাফকে কিসওয়া বলা হয়। প্রতি বছর কাবা শরিফের ওপর থাকা রেশমি কাপড় (গিলাফ) পরিবর্তন করা হয় অত্যন্ত নিখুঁত পরিকল্পনা অনুযায়ী।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই পবিত্র রীতি সম্পন্ন করতে ও প্রতিটি ধাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে বহু অভিজ্ঞ কারিগর ও প্রযুক্তিবিদরা অংশগ্রহণ করেন।
কাবার গিলাফ পরিবর্তনের দৃশ্য ‘মক্কা লাইভ চ্যানেল’-এর মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ইসলামের প্রথম যুগ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফাত দিবসে কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তনের রীতি ছিল। ২০২২ সাল মোতাবেক ১৪৪৪ হিজরি থেকে কাবার গিলাফ পরিবর্তনের সময়সূচিতে পরিবর্তন করে সৌদি সরকার। তখন থেকে হিজরি নববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে মহররমের প্রথম রাতে গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।
পবিত্র কাবার গিলাফ মূলত চারটি কাপড়ের টুকরো এবং দরজার একটি অংশ থাকে। নতুন কাপড়ের টুকরোগুলো ওপরের দিকে তুলে পুরনো কাপড়ের টুকরোগুলো ধীরে ধীরে নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়।
৬৫৮ বর্গমিটারের গিলাফটি তৈরিতে ৬৭০ কেজি কালো রেশম ব্যবহার করা হয়। ৪৭টি কাপড়ের টুকরা দিয়ে পুরো গিলাফ সেলাই করা হয়। ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেলাই মেশিনে করা হয় এসব কাজ। কারুকার্যের অনেক কাজ হাতে করা হয়। কাপড়ের ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি অংশ একত্রে সেলাই করা হয় এবং তামার রিং দিয়ে গোড়ায় স্থির করা হয়।
২১ ক্যারেটের ১২০ কেজি স্বর্ণ ও ১০০ কেজি রুপার সুতা দিয়ে সেই কাপড়ে লেখা হয় পবিত্র কোরআনের আয়াত ও আল্লাহর গুণবাচক নাম। গিলাফের সব কাজ শেষ করতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগে। সব মিলিয়ে ৮৫০ কেজি ওজনের এই গিলাফ তৈরিতে ব্যয় হয় ২৫ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল বা সাড়ে ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই গিলাফকে বিশ্বের ব্যয়বহুল কাপড় বলে মনে করা হয়।