মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৯ অপরাহ্ন

যশোর প্রতি মাসে শত শত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ও করোনা পরীক্ষার কিট মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে

আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫
যশোর প্রতি মাসে শত শত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ও করোনা পরীক্ষার কিট মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে। অব্যবহৃত আছে করোনার প্রায় ৭ হাজার ভ্যাকসিন । বর্তমানে পৌরসভায় ২ হাজার ২০০ এবং সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৬০০ ডোজ ভ্যাকসিন অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিত ভ্যাকসিন এলেও সাধারণ মানুষ আগ্রহ না থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা।গতকাল রোববার সকালে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

যশোর জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভাইরাস রোধে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে সব ধরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং নতুন করে কোনো উপকরণ সংযোজন করার প্রয়োজন থাকলে সেগুলো এখন প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যশোর জেলায় করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

ডা মাসুদ রানা বলেন, সম্প্রতি দেশে কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে যশোর সদর শহরে একজন নারীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে এটি আগের মতো সংক্রামক না হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন । তবুও তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে।

সিভিল সার্জন জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যশোর জেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৮টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ৩৫ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ওয়ার্ড  ১টি আই সি ইউ প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছে, জেলায় পর্যাপ্ত র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ জুলাই মাসে শেষ হবে, তাই কিট সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করে প্রস্তুত রাখার জন্যও সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে ডা. মাসুদ রানা বলেন, যদিও নতুন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য নেই, তবে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে যাদের বয়স বেশি এবং যারা নানা রোগে আক্রান্ত, তাদের ঝুঁকি বেশি। তাই নিয়মিত মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজব থেকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, বেনাপোল চেকপোস্টে ইমিগ্রেশে বিশেষ নজরদারির ওপর জোর দেয়া হয়েছ।তিনি বলেন, প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ ট্রাক বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াত করে ভারতে  এবং এই ট্রাকের চালক হেলপারদের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সভায় সিভিল সার্জন জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সকলকে সতর্ক থাকতে হবে, বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবন গুলোতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

উন্নয়ন কমিটির সভায় কোরবানির পশুর চামড়া বেচাকেনা নিয়েও আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসক জানান, এ বছর হাটে চামড়া বিক্রি কম হওয়ার অন্যতম কারণ হলো চামড়া সংরক্ষণ করতে পারা। বিশেষ করে লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোতে সরকারিভাবে ২৫০ মেট্রিক টন লবণ দেওয়ায় চামড়া সংরক্ষণে কোনো সমস্যা হয়নি। চামড়ার দাম যখন বাড়বে, তখনই তারা সেগুলো বিক্রি করবে। তিনি জানান, জেলায় ৮০ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করা আছে।

সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা পরিষদ, পৌরসভা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ, বিএসটিআই, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ সরকারি দপ্তরগুলোর কাজের অগ্রগতির বিষয়েও আলোচনা করা হয়।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম সিদ্দিকী, পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102