আমিনুল ইসলাম, চরফ্যাশন প্রতিনিধি:
ভোলা-চরফ্যাশন উপজেলা আছলামপুর ইউনিয়নে জিয়া উদ্দিন সোহাগের মাছ শিকারের মহোৎসবে প্রায় ২ শত ৫০ একর জমির ফসল এখন পানির নিচে৷ নিজের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জিয়া খালের উপর তিনটি বাঁধ নির্মাণ করেছেন তিনি৷ এ বাঁধের কারনে জলাবদ্ধতায় কৃষকের মাথায় হাত৷ লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণের বোঝা পরিশোধের দুশ্চিন্তায় কৃষক ও খামারিরা৷
মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ওমরপুর (সাবেক আছলামপুর) ৬নং ওয়ার্ড বশির আহাম্মেদ মিয়া বাড়ি থেকে সুলতান মিয়ার বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিঃ খালটির উপর আব্দুল অদুদ পাটওয়ারী বাড়ির সামনে একটি, সিরাজুল হক খনকার বাড়ির সামনে একটি ও খালের মাঝামাঝি পথে একটি মোট তিনটি বাঁধ দিয়ে অসংখ্য খুঁটি জাল, টানা জাল ও ঝোপ দিয়ে মাছ শিকারের মহোৎসবে মেতে ওঠায় কৃষকদের জন্য এ সর্বনাশ বয়ে এনেছে৷
নিয়ম অনুযায়ী এ পুরো এলাকার বর্ষার পানি জিয়া খালটির মাধ্যমে বেতুয়া খাল হয়ে ১৬ কপাট স্লুইসগেট দিয়ে মেঘনা নদীতে যাওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু এলাকার আতঙ্কিত, ক্ষমতাধর জিয়া উদ্দিন সোহাগ গংদের একক সিদ্ধান্তে মাছ শিকারের জন্য খালটির উপর বাঁধ নির্মাণ করায় বিরামহীন বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত একর জমির কৃষকের ফসল, খামারের সবজি ও চলাচলের রাস্তা৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, বশির আহাম্মেদ (সাবেক চেয়ারম্যান- আছলামপুর) এর ছেলে জিয়া উদ্দিন সোহাগের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও জুয়া খেলা সহ অসংখ্য মামলা রয়েছে৷ তার বাবা বশির আহাম্মেদ নিজে বাদী হয়ে ছেলে সোহাগের অত্যাচারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন৷ সোহাগ রাস্তা থেকে সরকারি গাছ কেটে নেয়া, ইচ্ছা করে মানুষের সাথে ঝগড়ার সৃষ্টি করা, রাস্তার উপর নির্মিত কালবার্ড ও জিয়া খালের উপর বাঁধ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করার মতো অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ এলাকার কৃষক ও খামারিরা ভয়ে মুখ খুলছেন না৷ জরুরি ভিত্তিতে উক্ত খালের বাঁধ কেটে জলাবদ্ধতা নিরশন না হলে এলাকার শত শত একর জমির ফসল এবং খামারিদের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ ইয়াছিন সেলিম বলেন, সোহাগ গং শুধু মাছ শিকারের জন্য খালের উপর বাঁধ নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে আজ এলাকার কৃষকদের ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ আমি এর তীব্র নিন্দা এবং উপজেলার নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি৷
আছলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম সিরাজুল ইসলাম জানান, জিয়া খালের উপর বাঁধ নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করার অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি৷ অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
এ প্রসঙ্গে জিয়া উদ্দিন সোহাগের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি৷