ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এক বাসচালক রীতিমতো এলাহি কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এক্সপ্রেসওয়েতে দফায় দফায় দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও যাত্রীদের কান্নায় মন গলেনি চালকের।
একপর্যায়ে বাসের ছাদ উড়ে মহাসড়কে পড়ে গেলে ছাদবিহীন বাস নিয়েই চালক ঢুকে পড়েন অন্ধকার গ্রামে। এর আগে প্রাণ বাঁচাতে বাস থেকে লাফিয়ে ও বিভিন্ন উপায়ে নামতে গিয়ে আহত হন অন্তত আটজন যাত্রী।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে এক্সপ্রেসওয়েতে। এতে হতবিহবল হয়ে পড়েন আইনশৃঙ্খলা ও উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বাসে থাকা এক নারী যাত্রী জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের কামারখোলা রেল ফ্লাইওভারের ওপর ‘বরিশাল এক্সপ্রেসওয়ে’ নামক দ্রুতগতির বাসটি সামনে থাকা একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এসময় সামনে থাকা আরও একটি কাভার্ডভ্যানে গিয়ে ধাক্কা লাগে। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেলে বাসচালক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভেতরে থাকা বেশিরভাগ যাত্রী তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকলেও মুহূর্তেই জেগে ওঠেন সকলে। এসময় পেছনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে আরও বেপরোয়া গতিতে চালানো শুরু করেন বাসচালক।
পরে সমাষপুর এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে বাসটির ছাদ উড়ে সড়কে ছিটকে পড়ে। এতে যাত্রীরা আরও আতঙ্কিত হয়ে বাসটি থামানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে সায় দেননি চালক। এসময় বাস থেকে লাফিয়ে নেমে যান ১০-১২ জন। বাসটিতে ২৫-৩০জন যাত্রী ছিলেন।
একপর্যায়ে পদ্মা সেতু উত্তর থানা এলাকার কুমারভোগ এলাকায় অন্ধকার সড়কে ঢুকে বাস রেখে পালিয়ে যান চালক।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ জানান, এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে আহত আটজনকে উদ্ধার করেছি। বেপরোয়া বাসটির গতি মাঝেমধ্যে কমলে তারা লাফিয়ে নামেন। এর মধ্যে একজনের মাথা ফেটেছে। একজন চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে কোথায় পড়েছেন তার এখনও হদিস পাওয়া যায়নি। তবে নারী ও শিশুরা বাস থেকে নামতে না পেরে বাসেই রয়ে যান। চালক যেখানে বাস রেখে পালিয়েছেন সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, ছাদবিহীন বাসটি এক্সপ্রেসওয়ের পাশে লৌহজংয়ের কুমারভোগ গ্রাম থেকে আটক করা হয়েছে। সেটি থানায় রয়েছে। বাসচালক পালিয়ে গেছেন। তাকে ধরতে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।