তার প্রত্যাবর্তনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবারও তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে এইচ-১বি ভিসা নিয়ে, যা দেশের চাকরি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতীয় কর্মীদের জন্য এই পরিস্থিতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ববিখ্যাত উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের চাকরি দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও, ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট পদে ফিরবেন, তখন ভিসা নীতি আরও কঠোর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত, যারা তাকে পুনরায় নির্বাচিত করতে সমর্থন দিয়েছেন, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ মনে করেন বিদেশি, বিশেষ করে ভারতীয়দের কারণে তাদের চাকরি হারাচ্ছেন তারা। এর ফলে, যখনই ট্রাম্প কোনো ভারতীয়কে উচ্চ পদে নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন, তখন তা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের আসন্ন প্রত্যাবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করছেন ভারতীয়রা। অনেকেই চাকরি পাওয়ার পরেও কাজের জায়গায় যোগ দিতে পারছেন না, কারণ পুরো প্রক্রিয়াটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এমনকি, অনেক চাকরির অফার বাতিল করা হয়েছে এবং কেউ কেউ ভিসা সমস্যার কারণে চাকরি পাচ্ছেন না।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হায়দরাবাদের আটজন ভারতীয় পেশাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের মধ্যে অন্তত তিনজনকে চাকরির অফার দেওয়ার পর তা বাতিল করা হয়েছে, যার কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে “ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা”।
এর মধ্যে একজন হলেন হায়দরাবাদের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বৈষ্ণবী পুভভাদা, যিনি ডিসেম্বর মাসে একটি খ্যাতনামা মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি পেয়েছিলেন। চাকরি পাওয়ার পর সানফ্রান্সিস্কোতে থাকার ব্যবস্থা শুরু করার পর, তিনি জানতে পারেন যে তার চাকরির অফারটি সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রত্যাহার করেছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হল, চাকরি পাওয়ার পর তিনি তার বর্তমান চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছিলেন, যা তাকে বড় বিপাকের মুখে ফেলেছে।
বৈষ্ণবী জানান, “আমাকে লিখিতভাবে চাকরি নিশ্চিত করা হয়েছিল, কিন্তু এখন তারা ভিসা নীতির পরিবর্তনের কথা বলছেন এবং আমাকে জানাচ্ছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা হবে। কিন্তু আমি কতদিন অপেক্ষা করব?”
মার্কিন প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মোট এইচ-১বি ভিসার মধ্যে ৭২ শতাংশই ভারতীয়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এই কারণে, এই ভিসার নীতিমালা কঠোর হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ভারতীয়রা।
এছাড়া, ট্রাম্পের আগের শাসনামলে এই ভিসা নিয়ে নানা কড়াকড়ি আরোপ হয়েছিল এবং তার পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর তা আরও কঠোর হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।