শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১৬ অপরাহ্ন

‘ফোরশক’ হতে পারে আজকের কম্পন, বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

দেশে প্রায় এক শতাব্দীতে বড় ধরনের কোনো ভূমিকম্প হয়নি। কিন্তু ভূমিকম্পপ্রবণ এ অঞ্চলের অতীত ইতিহাস বলছে, বড় দুর্যোগের পূর্বে ছোট ছোট কম্পন হয়ে থাকে। তাই শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পকে ‘ফোরশক’ বা বড় ভূমিকম্পের আগাম সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ৭ মাত্রার ভূমিকম্প ১০০ থেকে ১২৫ বছর পরপর এবং ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ২৫০ থেকে ৩০০ বছর পরপর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ১৯৩০ সালের পর বড় ভূমিকম্প না হওয়ায় ঝুঁকি বেড়েছে।’তিনি জানান, এ অঞ্চলে অতীতে ১৮৬৯ সালের ৭.৬ মাত্রার কাছাড়, ১৮৮৫ সালের ৭.১ মাত্রার বেঙ্গল, ১৮৯৭ সালের ৮.১ মাত্রার ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান’ এবং ১৯১৮ সালের ৭.৬ মাত্রার শ্রীমঙ্গল ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ কম্পন হয়েছে।

আজকের ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ঢাকার খুব কাছে, নরসিংদীতে। স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ২০ সেকেন্ড। এতে ঢাকার বিভিন্ন ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞের দাবি, বিল্ডিং কোড না মানায় ভবনগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে।অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘ঢাকা শহরে প্রায় ২১ লাখ ভবন রয়েছে। রানা প্লাজা ধসের পর আমরা বারবার ভবনগুলো পরীক্ষা করার কথা বলেছি। জরুরি ভিত্তিতে এসব ভবন পরীক্ষা করে ঝুঁকিমুক্ত (সবুজ), সংস্কারযোগ্য (হলুদ) এবং ঝুঁকিপূর্ণ (লাল) হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত।’

আশঙ্কার বিষয় হিসেবে তিনি আরও জানান, ‘ঢাকার ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এক থেকে তিন লাখ মানুষ হতাহত হতে পারে এবং প্রায় ৩৫ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান রুবাইয়াত কবির জানান, বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ও ইউরোশিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে এখানে বিভিন্ন সময় কমমাত্রার কম্পন হয়।তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ২০০৭ সাল থেকে পর্যবেক্ষণ শুরু হওয়ার পর ঢাকার আশপাশে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার কম্পন এবারই প্রথম।’ বড় ভূমিকম্পের পর সাধারণত পরাঘাত বা ‘আফটারশক’ হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে তিনি জানান। যদিও এখন পর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি।

দেশে এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ছাদের রেলিং ধসে তিনজন, নরসিংদীতে দুইজন এবং নারায়ণগঞ্জে দেয়াল ধসে এক শিশু প্রাণ হারিয়েছে। সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে শতাধিক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102