শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩১ অপরাহ্ন

চট্টগ্রামে তৈরি ৩ ল্যান্ডিং ক্রাফট যাচ্ছে আরব আমিরাতে

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

দেশের জাহাজ নির্মাতা ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে তৈরি ৩টি জাহাজ রপ্তানি হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই)। চট্টগ্রাম থেকে ইউএইর প্রতিষ্ঠান মারওয়ান অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি এলএলসির কাছে হস্তান্তর করা হয় তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট- মায়া, এসএমএস এমি ও মুনা। বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর তীরে জাহাজগুলো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের পটিয়াতে অবস্থিত ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের সামনে নোঙ্গরকৃত জাহাজে আয়োজিত জাহাজ ডেলিভারি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি।ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শহিদুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান, মারওয়ান শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি এলএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ মোহাম্মদ হুসাইন আল মারজুকি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবিব, কোস্ট গার্ড ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা।

প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি।বলেন, বাংলাদেশের একটি বড় ও সক্ষম জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে ইউএই-এর জন্য তিনটি নতুন ল্যান্ডিং ক্রাফট নির্মাণ-দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন এবং ইউএই-এর মারওয়ান শিপিংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের সহযোগিতা ভবিষ্যতে সামুদ্রিক খাতে আরও বড় আকারে বিস্তৃত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান বলেন, আজ এখানে এসে আমি দেখলাম, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাত যুক্ত হওয়ায় আমাদের রপ্তানি বাস্কেটে জাহাজ নির্মাণ এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

জাহাজ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তিনটি জাহাজই সম্পূর্ণভাবে ইউএই-ভিত্তিক ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী নির্মিত। এগুলো অফশোর সাপ্লাই, মালবাহী পরিবহন এবং সমুদ্র বাণিজ্যের বিভিন্ন কাজে ব্যবহারযোগ্য। আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের পর জাহাজগুলো আরব আমিরাতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।ল্যান্ডিং ক্রাফট তিনটিরই দৈর্ঘ্য ৬৯ মিটার, প্রস্থ ১৬ মিটার এবং ড্রাফট ৩ মিটার। আন্তর্জাতিক ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি ব্যুরো ভেরিটাসের মানদণ্ড অনুযায়ী নির্মিত এবং ১০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। প্রায় ৭০০ বর্গমিটার ক্লিয়ার ডেক স্পেস থাকায় ভারী যন্ত্রপাতি ও বাল্ক কার্গো পরিবহনে উপযুক্ত।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, গত বছর মারওয়ান শিপিংয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের আটটি জাহাজ নির্মাণের বড় ক্রয়াদেশ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ‘রায়ান’ নামে একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ নামে দুটি টাগবোট ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই চুক্তির ধারাবাহিকতায় এবার আরও তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট হস্তান্তরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি জাহাজের চাহিদা আবারও বাড়ছে। তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট হস্তান্তর আমাদের জন্য শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, দেশের পুরো জাহাজনির্মাণ শিল্পের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) শহিদুল বাশার বলেন, এ ধরনের প্রতিটি জাহাজ নির্মাণে বর্তমান বাজার দরে মোট খরচ দাঁড়ায় প্রায় ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এই তিনটি জাহাজের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আমাদের মজুরি বা ‘ওয়ার্কম্যানশিপ’ বাবদ ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ২.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। এক বছরেরও কম সময়ে আমরা জাহাজগুলো নির্মাণ করে হস্তান্তরের উপযোগী করেছি।ওয়েস্টার্ন মেরিন সূত্র জানায়, মারওয়ানের সঙ্গে করা চুক্তিতে মোট আটটি জাহাজ রয়েছে- দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দুটি অয়েল ট্যাংকার। এর মধ্যে চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ও দুটি টাগবোট চলতি বছরই রফতানি করা হচ্ছে। বাকি দুটি অয়েল ট্যাংকার ২০২৬ সালের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102